একাকিত্ব দূর করতে যে উপায় বেছে নিলো সুইডেন


Assroy প্রকাশের সময় : নভেম্বর ২১, ২০২৩, ৩:০২ অপরাহ্ন /
একাকিত্ব দূর করতে যে উপায় বেছে নিলো সুইডেন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রচণ্ড শীতেও সূর্যের দেখা মিলছে না বা মিললেও খুবই অল্প সময়। এমনই একটা দেশ হলো সুইডেন। যেখানে বছরের কিছু সময় সূর্যের দেখা মিললেও তা থাকে ২৪ ঘণ্টায় মাত্র তিন ঘণ্টা। আর এই দেশটির বড় সমস্যা হলো একাকিত্ব। এই সমস্যাকে দূর করতে  রাস্তায়, বাসে, স্কুলে, কাজের জায়গায় একে অপরকে দেখা মাত্র ‘হাই’ বলার প্রচারণা শুরু হয়েছে সুইডিশরা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এ খবর জানিয়েছে। 

সুইডেনের উত্তরের একটি শহর হলো লুলিয়া যেখানে মাইনাস ১০ ডিগ্রি তাপমাত্রার সত্ত্বেও  সমুদ্রের বরফ পানিতে প্রতিদিন নিয়ম করে সাঁতার কাটেন ক্যাটরিনা ইলিপারটুলা নামের ৪৪ বছর বয়সী এক নারী। শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও ঘটনা সত্য। গরমের দিনে সাঁতার না কাটলেও শীতে কাজে যাওয়ার আগে বেশ আরাম করেই বরফ পানিতে ভেসে বেড়ান তিনি। বেশ কয়েক বছর ধরে এ অভ্যাস গড়ে তুলেছেন তিনি। এছাড়া স্কিইং, বরফের রাস্তায় হাঁটার মতো নানা অভ্যাস গড়ে তুলেছেন স্থানীয় মানুষ। গবেষকদের মতে মানুষ এসব অভ্যাস গড়ে তুলছে একাকিত্ব থেকে। 

একাকিত্ব দূর করতে এবার উদ্যোগ নিয়েছেন সুইডেন মিউনিসিপিলিটি। কাজের জায়গা থেকে শুরু করে স্কুল, বাস সব জায়গায় ’হাই’ বলার ক্যাম্পেইন শুরু করেছে তারা। এর মাধ্যমে মানুষের একে অপরের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ছে।

সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে যে ১৬ থেকে ২৯ বছর বয়সীদের মধ্যে, লুলিয়ার ৪৫ শতাংশ মানুষ একাকিত্বের ফলে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। তবে ৮৫ বছর বা তার বেশি বয়সীদের মধ্যে এই সংখ্যাটি অনেক কম। নারীদের মধ্যে যা ৩৯ শতাংশ এবং পুরুষদের মধ্যে ২৬ শতাংশ।

স্টকহোম স্কুল অফ ইকোনমিক্সের ওয়েলফেয়ার, ওয়েলবিং অ্যান্ড হ্যাপিনেসের অধ্যাপক মাইকেল ডাহলেন বলেছেন, একাকিত্ব – বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে  একটি বৈশ্বিক সমস্যা এবং সুইডেনে শীতের সময়ের অন্ধকারের জন্য এ সমস্যা আরও প্রকট। তিনি বলেন, একাকিত্ব এবং বিচ্ছিন্নতা এই মুহূর্তে বিশ্বের যে কোনও জায়গায় বড় ধরনের একটি সমস্যা। আর শীতের দেশগুলোতে মানুষ কম বের হয়, সামাজিকভাবে যোগাযোগও কম হয়, তাই সমস্যাও জটিল হচ্ছে। 

এদিকে আসা কোস্কি নামের এক ব্যক্তি যিনি লুলিয়া মিউনিসিপিলিটিতে কর্মরত তিনিই মূলত এই অভিনব ‘হাই’ ক্যাম্পেইনের উদ্যোক্তা।  তিনি বলেন, আমরা চাই না লুলিয়া শুধু শহর হিসেবে বেড়ে উঠুক আমরা চাই নিরাপদ ও বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ গড়ে উঠুক। এই অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত এতে করে বন্ধুত্বপূর্ণ সমাজ গড়ে উঠবে।