আন্তর্জাতিক ডেস্ক
দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার সম্পর্কের আবারও অবনিত ঘটল। মঙ্গলবার মহাকাশে উত্তর কোরিয়ার সামরিক গোয়েন্দা স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের প্রতিবাদে, ২০১৮ সালে দুই দেশের মধ্যে সই হওয়া সামরিক চুক্তির অংশবিশেষ স্থগিত করার ঘোষণা করেছে সিউল। এর প্রতিক্রিয়ায় দুই দেশের সীমান্তে আরও বেশি সংখ্যক সেনা ও সামরিক সরঞ্জাম মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন। বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।
উত্তর কোরিয়ার ওপর উপগ্রহ উৎক্ষেপণে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তা সত্ত্বেও গত মঙ্গলবার সফলভাবে একটি সামরিক গোয়েন্দা স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে দেশটি। এটিই প্রথম নয়, এর আগেও দুবার মহাকাশে গোয়েন্দা স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের প্রচেষ্টা চালিয়েছিলো উত্তর কোরিয়া। তবে দুবারই ব্যথ্য হয়েছিলো দেশটি।
সম্প্রতি পিয়ংইয়ং স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ প্রচেষ্টার ঘোষণা দিলে দেশটির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলো দক্ষিণ কোরিয়া। গতকাল বুধবার সফলভাবে একটি সামরিক গোয়েন্দা স্যাটেলাইনট উৎক্ষেপণের ঘোষণা দেয় পিয়ংইয়ং। আর এতেই বেশ চটে যায় দক্ষিণ কোরিয়া।
নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও মহাকাশে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের প্রতিক্রিয়ায়, ২০১৮ সালে দু’দেশের মধ্যে সই হওয়া সামরিক চুক্তির অংশবিশেষ স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। সিউলের এই পদক্ষেপ ভালোভাবে নেয়নি পিয়ংইয়ং। এর জবাবে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে সামরিক চুক্তির শর্ত মানতে পিয়ংইয়ং আর বাধ্য নয় বলে ঘোষণা করে দেশটি।
উত্তর কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ আজ বৃহস্পতিবার জানালো, দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক চুক্তিভঙ্গের ঘোষণার পরপরই দুই দেশের সীমান্তে আরও বেশি সংখ্যক সেনা ও সামরিক সরঞ্জাম মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন।
এক বিবৃতিতে কিম বলেন, ‘এখন থেকে আমাদের সেনাবাহিনী ১৯ সেপ্টেম্বরের উত্তর-দক্ষিণ সামরিক চুক্তিতে মানতে আর বাধ্য থাকবে না। আমরা স্থল, সমুদ্র এবং আকাশসহ সব ক্ষেত্রে সামরিক উত্তেজনা এবং সংঘর্ষ প্রতিরোধে নেওয়া পদক্ষেপগুলো প্রত্যাহার করব। একইসঙ্গে সামরিক সীমানা রেখা বরাবর এই অঞ্চলে আরও শক্তিশালী সশস্ত্র বাহিনী এবং নতুন ধরণের সামরিক সরঞ্জাম মোতায়েন করব।’
কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা কমিয়ে আনতে ২০১৮ সালে এক ঐতিহাসিক বৈঠকে বসেন দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইন এবং উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন। এ সময় দুই দেশের মধ্যে আস্থা ফেরাতে একমত ‘কম্প্রিহেনসিভ মিলিটারি অ্যাগ্রিমেন্ট’ নামে একটি সামরিক চুক্তি সই করেন তারা।
তবে গতকাল পিয়ংইয়ং যখন সামরিক গোয়েন্দা স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে সফলতার খবর জানালেন, তখনই এ সামরিক চুক্তির অংশবিশেষ স্থগিত করার ঘোষণা দিলো সিউল। এরপরই পাল্টা পদক্ষেপ নেয় পিয়ংইয়ং।
আপনার মতামত লিখুন :