আন্তর্জাতিক ডেস্ক
চীনের রাজধানী বেইজিংসহ দেশটির বিভিন্ন শহরে শিশুদের মধ্যে রহস্যজনক নিউমোনিয়া ছড়িয়ে পড়ছে। রোগটি রহস্যজনক বলার কারণ, সাধারণত নিউমোনিয়া আক্রান্ত হওয়ার যেসব উপসর্গ দেখা দেওয়া কথা শিশুদের শরীরে সেগুলো অনুপস্থিত। শিশুদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া রহস্যময় এ শ্বাসতন্ত্রের রোগ সম্পর্কে বুধবার (২২ নভেম্বর) দেশটির সরকারের কাছে বিস্তারিত তথ্য চেয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এই খবর প্রকাশ করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
সম্প্রতি বেশ কয়েক দিন ধরেই চীনা শিশুদের মধ্যে একধরনের শ্বাসতন্ত্রের রোগের প্রকোপ শুরু হয়েছে, যা এর আগে কখনও দেখা যায়নি। চীনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ন্যাশনাল হেলথ কমিশন গত ১৩ নভেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে রোগটিকে রহস্যজনক নিউমোনিয়া বলে উল্লেখ করেছে।
রোগটিকে রহস্যজনক বলার কারণ, আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ইনফ্লুয়েঞ্জার বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়। পরে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাদের মধ্যে শ্বাসকষ্টও শুরু হচ্ছে, যা মূলত নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে দেখা যায়। তবে নিউমোনিয়ার রোগীদের শ্বাসকষ্ট ছাড়াও কফ ও বুকে ঘড়ঘড় শব্দের মতো উপসর্গ দেখা যায়—যা আক্রান্ত শিশুদের ক্ষেত্রে দেখা যায়নি।
আন্তর্জাতিক জনস্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ সংস্থা প্রোমেড জানিয়েছে, রহস্যময় এই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের প্রায় সবাই শিশু। চীনের বিভিন্ন শহরে এই রোগের উপস্থিতি শনাক্ত করা হলেও, সবচেয়ে বেশি প্রকোপ রাজধানী বেইজিং এবং উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় লিওনিয়াং প্রদেশে। সেখানে এ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা রীতিমতো প্রাদুর্ভাব পর্যায়ে পৌঁছেছে।
রহস্যময় এ রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে গত বুধবার চীন সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ জানিয়েছে ডব্লিউএইচও। এক বিবৃতিতে ডব্লিউএইচও জানায়, করোনা সংক্রান্ত বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ারে জেরে ইনফ্লুয়েঞ্জা, শিশুদের মাইক্রোপ্লাজমা নিউমোনিয়া, শ্বাসতন্ত্রের ভাইরাস, করোনার জন্য দায়ী সার্স ভাইরাস—এসবের যে কোনও একটি বা একাধিক কারণ নতুন এই নিউমোনিয়া রোগের জন্য দায়ী বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এই রোগের সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রাথমিক তথ্য পর্যালোচনা করে এই অনুমান করছেন গবেষকরা।
বিবৃতিতে ডব্লিউএইচও জানায়, ‘চীন আরও বিস্তারিত তথ্য প্রদান করলে ব্যাপারে আরও সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারব আমরা।’
এর আগে গত অক্টোবরের মাঝমাঝি সময়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্ক করেছিল, রাজধানী বেইজিংসহ চীনের বিভিন্ন অঞ্চলে ইনফ্লুয়েঞ্জা জাতীয় অসুস্থতার হার বাড়ছে।
সাধারণত, অক্টোবর ও নভেম্বরে দেশটিতে ঋতু পরিবর্তনের সময়ে স্বাভাবিকভাবেই ইনফ্লুয়ঞ্জা বা সর্দিজ্বরের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, গত তিন বছরের তুলনায় চলতি বছর চীনে এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেড়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :