যে কারণে ইউক্রেনে বড়দিন পরিবর্তন


Assroy প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ২৩, ২০২৩, ১২:১৯ অপরাহ্ন /
যে কারণে ইউক্রেনে বড়দিন পরিবর্তন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৯১৭ সালের পর প্রথমবারের মতো ৭ জানুয়ারির পরিবর্তে ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন উদযাপন করতে যাচ্ছে ইউক্রেন। দেশটিতে মস্কোর প্রভাব নির্মূল করার সর্বশেষ প্রচেষ্টা হিসেবে ইউক্রেন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শনিবার (২৩ ডিসেম্বর)ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এই খবর জানিয়েছে।

যুদ্ধ হোক বা শান্তি—বড়দিন সবসময়ই আসে। তবে বছর ঘুরে ইউক্রেনে এই দিনটি এবার একটু তাড়াতাড়িই যেন আসছে। দেশটিতে এবার ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন পালন করা হবে। ইউক্রেনের শত বছরের ইতিহাসে এবারই প্রথম এমন ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে।

সাধারণত রীতি অনুযায়ী, জুলিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারে বড়দিন পালন করে থাকে ইউক্রেনীয়রা। এই ক্যালেন্ডারে বড়দিনের তারিখ ৭ জানুয়ারি। এই দিনে ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়াও বড়দিন পালন করে। দেশটির সঙ্গে সাংস্কৃতিক এ মিল থাকায় চলতি বছর জুলিয়ান ক্যালেন্ডারের তারিখের পরিবর্তে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের তারিখ ব্যবহার করে বড়দিন পালন করতে যাচ্ছে ইউক্রেন। গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার মূলত পশ্চিমারা ব্যবহার করেন।

পশ্চিমা গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের ব্যবহারকে ইউরোপের সঙ্গে কিয়েভেরে এক সারিতে দাঁড়াবার ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।

চলতি বছর বড়দিন আগে থেকে শুরু হওয়ার ঘোষণার পর দেশটিতে ক্রিসমাসের প্রস্তুতিও তাই একটু আগেই শুরু হয়ে গেছে। বড়দিনকে সামনে রেখে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে সাজসজ্জা প্রস্তুতকারী কারখানাগুলো।

কিয়েভের বাইরে ছোট একটি শহর ক্লাভদিভো-তারাসোভ। শহরটির একটি সাজসজ্জা কারখানার কর্মীদের সঙ্গে বড়দিন নিয়ে কথা বলেছেন বিবিসির প্রতিনিধিরা। পুরো সোভিয়েত ইউনিয়নকে সাজসজ্জার জিনিসপত্র সরবরাহকারী তিনটি সাজসজ্জার কারখানার মধ্যে একটি ছিল এই শহরে। বর্তমানে কারখানাটির বেহাল দশা।

কারখানার একজন কর্মচারী লিওকাদিয়া। ১৯৭৮ সাল থেকে এই প্রোডাকশন লাইনে কাজ করছেন তিনি। বিবিসিকে লিওকাদিয়া বলেন, ‘আমাদের অনেক লোক ছিল—এখন নেই।’

অনায়াসেই তিনি ডেস্কে লাগানো একটি গ্যাস বার্নার ব্যবহার করে কাচের বাবল ফোলান। এই শীতে একটি উষ্ণ অভ্যর্থনার উৎস এই বাবল।

বছরের পর বছর ধরে ধীরে ধীরে উৎপাদন কমতে থাকার পর ২০২২ সালে  সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল কারখানাটি। তখন ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রায় আগ্রাসন শুরু হয়। এর পরপরই এক মাসের জন্য  রুশ বাহিনীর দখলে চলে গিয়েছিল অঞ্চলটি।

হেনিয়া নামে আরেকজন কর্মী এই বাবলে হরেক রকমের ছবি আঁকার কাজ করেন। তিনি বিবিসিকে বলেন,‘ট্যাংকগুলো যখন রাস্তায় নেমেছিল এখানে তখন খুবই ভীতিকর পরিবেশ ছিল। আমরা বাইরে যেতে পারতাম না। আমাদের কাছে কোনও তথ্য ছিল না। যেন আমরা পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলাম। এটা খুবই ভয়ংকর ছিল।’

তবে বর্তমানে কারখানটির মাত্র এক তৃতীয়াংশ কর্মী ফিরে কাজে ফিরেছেন। এতদসত্ত্বেও পুরো উদ্দমে এখনও সাজসজ্জার সরঞ্জাম তৈরি করা হচ্ছে। বড়দিনের উল্লাসের ছোট ছোট এই খুশির টুকরাগুলো খুব সাবধানে তৈরি করা হয়। পরে আনন্দ ও উৎসবের বার্তা নিয়ে সেগুলো সারা দেশে পৌঁছে যায়।