চাপের মুহূর্তে কিউইদের এগিয়ে নিচ্ছেন উইলিয়ামসন-ফিলিপস


Assroy প্রকাশের সময় : নভেম্বর ২৯, ২০২৩, ৯:৩৩ পূর্বাহ্ন /
চাপের মুহূর্তে কিউইদের এগিয়ে নিচ্ছেন উইলিয়ামসন-ফিলিপস

স্পোর্টস ডেস্ক

প্রথম টেস্টের সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস ৮৫.১ ওভারে ৩১০ (জয় ৮৬, শান্ত ৩৭, মুমিনুল ৩৭, সোহান ২৯)

নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংসে ৬৫ ওভারে ২০৭/৫ (কেন উইলিয়ামসন ৭৭*, গ্লেন ফিলিপস ১৯*; ল্যাথাম ২১, কনওয়ে ১২, হেনরি নিকোলস ১৯, ড্যারিল মিচেল ৪১, টম ব্লান্ডেল ৬) 

ব্লান্ডেলকে ফেরালেন নাঈম

চা বিরতির পর নতুন ব্যাটার টম ব্লান্ডেলকে বেশিক্ষণ টিকতে দেয়নি বাংলাদেশ। নাঈম হাসানের লেগ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারিতে ব্যাট চালাতে গিয়ে সোহানকে ক্যাচ দিয়েছেন। তাতে ২৩ বলে ৬ রানে ফিরেছেন কিউই ব্যাটার। ১৭৫ রানে ৫ উইকেট হারালে চাপে পড়ে যায় সফরকারীরা।  

সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়ার দ্বিতীয় সেশনে বাংলাদেশের প্রাপ্তি দুই উইকেট

দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় সেশনেও বাংলাদেশের প্রাপ্তি দুই উইকেট। চা পানের বিরতিতে যাওয়ার আগে কিউইরা ৪ উইকেট হারিয়ে ১৬৮ রান সংগ্রহ করেছে। তারা পিছিয়ে আছে ১৪২ রানে। কেন উইলিয়ামসনের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে দুটি পঞ্চাশ ছাড়ানো জুটি উপহার দিয়েছে সফরকারীরা। একবার নিকোলসকে নিয়ে, তার পর মিচেলকে নিয়ে দুটি দারুণ জুটি উপহার দিয়েছেন।

নিকোলসকে ফেরানোর পর দ্রুত সময়ে মিচেলকেও আউট করা যেত। কিন্তু তার ক্যাচের রিভিউ না নেওয়ার মাশুল দিতে হয়েছে বাংলাদেশকে। কেন প্রান্ত আগলে খেললেও আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে খেলেছেন মিচেল। অবশেষে চা বিরতির আগেই মিচেলকে ফেরান তাইজুল। সুযোগগুলো নিতে পারলে এই সেশনে বাংলাদেশ আরও সুবিধাজনক অবস্থানে থাকতে পারতো। প্রান্ত আগলে খেলতে থাকা কেন উইলিয়ামসনও সেশনের শেষ ভাগে ক্যাচ দিয়েছিলেন।কিন্তু তাইজুল ক্যাচ ফেলায় সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে তাদের।     

কেন উইলিয়ামসনের ক্যাচ ফেলেছেন তাইজুল

সেট জুটি ভাঙলেও প্রান্ত আগলে মূল লড়াইটা চালিয়ে যাচ্ছেন কেন উইলিয়ামসন। নাঈমের ৪৯তম ওভারে কিউই এই ব্যাটারকে ফেরানোর সুবর্ণ সুযোগ এসেছিল। মিডউইকেটে তিনি ক্যাচ তুললেও সেটি নিতে পারেননি তাইজুল। কেনকে ফেরানো গেলে কিউইদের কোণঠাসা করার সুযোগ পেয়ে যেত স্বাগতিকরা। 

মিচেলকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙলেন তাইজুল

৪ রানে ফিরতে পারতেন ড্যারিল মিচেল। কিন্তু বাংলাদেশ রিভিউ না নেওয়ায় বেঁচে যান তিনি। তার পর তো আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে দ্বিতীয় সেশনে কেন উইলিয়ামসনের সঙ্গে প্রতিরোধ গড়েছেন। কেন অবশ্য ধীরে সুস্থে প্রান্ত আগলে খেলে তুলে নিয়েছেন ৩৪ তম হাফসেঞ্চুরি। দুজনে মিলে এই সময়ে যোগ করেছেন ৬৪ রান। এই জুটি আরও বড় হওয়ার আগে দারুণ এক ডেলিভারিতে মিচেলকে স্টাম্পড করিয়েছেন তাইজুল। তাতে ভেঙেছে কিউইদের গুরুত্বপূর্ণ জুটি। 

তাইজুলের বাতাসে ভাসিয়ে দেওয়া বল এগিয়ে এসে খেলার চেষ্টা করেছিলেন মিচেল। বল মারাত্মক টার্ন করায় তা ব্যাটে ছোঁয়াতে পারেননি। ফলাফল স্টাম্প ভেঙে দেন সোহান। তাতে ৪১ রানে ফিরেছেন মিচেল। তার ইনিংসে ছিল ৩টি চার ও ১টি ছয়ের মার।    

মিচেলকে আউটের সুযোগ হারালো বাংলাদেশ 

নিকোলসকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙার পর দ্রুততম সময়ে কিউইদের আরও বিপদে ফেলার সুযোগ ছিল বাংলাদেশের। ৩৪তম ওভারে গ্লাভসবন্দি হয়েছিলেন ড্যারিল মিচেল। কিন্তু বাংলাদেশ রিভিউ নেয়নি। তাতে সুযোগ হারিয়েছে স্বাগতিকরা। পরে রিপ্লেতে দেখা গেছে বল মিচেলের ব্যাটের কানায় লেগে সোহানের গ্লাভসে জমা  পড়েছে।     

৫৪ রানের জুটি ভাঙলেন শরিফুল

৪৪ রানে দুই ওপেনারের বিদায়ের পর প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টায় ছিলেন কেন উইলিয়ামসন ও হেনরি নিকোলস। এই জুটিতেই লাঞ্চ বিরতি পার হয় কিউই দল। তার পর তাদের ব্যাটে শত রানের কাছেও পৌঁছায় তারা। ৫৪ রানের জুটিটি ভেঙেছে নিকোলসের বিদায়ে। স্পিনার সরিয়ে আক্রমণে পেস আনাতেই মিলেছে সাফল্য। অফ স্টাম্পের বাইরে লেংথ বল করেছিলেন শরিফুল ইসলাম। বলটিতে খোঁচা মারতে গেলে গ্লাভসবন্দি হন নিকোলস। কিউই ব্যাটার ফিরেছেন ১৯ রানে।    

প্রথম সেশনে বাংলাদেশের প্রাপ্তি ২ উইকেট

বাংলাদেশকে অলআউট করতে পারলেও শুরুতে শরিফুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজের নিয়ন্ত্রিত বোলিং বেঁধে রেখেছিল কিউই ওপেনারদের। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়েই শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ সফল হয়েছে। দ্বিতীয় দিনের লাঞ্চ ব্রেকে যাওয়ার আগে তুলে নিতে পেরেছে কিউইদের দুই ওপেনারকে। এই সেশনে দুই উইকেট হারিয়ে নিউজিল্যান্ড তুলতে পেরেছে ৭৮ রান। তারা পিছিয়ে আছে ২৩২ রানে। 

শুরুতে ধরে খেললেও টম ল্যাথাম ও ডেভন কনওয়ে সেভাবে রান পাচ্ছিলেন না। ১৩ ওভারে তাইজুলের প্রথম ওভারে আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন ল্যাথাম। দুই ওভার পর সাফল্য পান টানা বল করতে থাকা মিরাজও। তার ঘূর্ণিতে ব্যাড-প্যাড ক্যাচ তুলে দেন আরেক ওপেনার কনওয়ে। এর পর অবশ্য ৩৪ রানের জুটি গড়ে প্রথম সেশন পার হতে অবদান রাখেন কেন উইলিয়ামসন ও হেনরি নিকোলস। এই সেশনে আবার চোট নিয়ে মাঠ ছেড়ে যান জাকির হাসান। 

তাইজুলের পর উইকেট তুলে নিলেন মিরাজ

দারুণ শুরু পেয়েছিল নিউজিল্যান্ড। তার পর দ্রুত দুই উইকেট তুলে কিউইদের চাপে ফেলতে পেরেছে বাংলাদেশ। শুরুতে তাইজুল ইসলামের আঘাতে ফিরেছেন ল্যাথাম। দুই ওভার বিরতির পর আঘাত হানেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তার নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে শর্ট লেগে শাহাদাতের অসাধারণ ক্যাচে ফিরেছেন কনওয়ে। ফেরার আগে কিউই ওপেনার করেছেন ১২ রান। 

ওপেনিং জুটি ভাঙলেন তাইজুল

বাংলাদেশকে গুটিয়ে দেওয়ার পর প্রথম ইনিংসে ভালো শুরু পেয়েছিল নিউজিল্যান্ড। ১২ ওভারে দুই ওপেনার টম ল্যাথাম ও ডেভন কনওয়ে মিলে ৩৬ রান যোগ করেছিলেন। ১৩তম ওভারে প্রথম বল করতে এসেই কিউইদের প্রতিরোধে আঘাত হেনেছেন তাইজুল।সুইপ করতে গিয়ে নাঈমের সহজ ক্যাচে পরিণত হয়েছেন ল্যাথাম। ল্যাথাম ফিরেছেন ২১ রানে।   

বাংলাদেশের ব্যর্থ রিভিউ

বাংলাদেশ দিনের প্রথম বলে অলআউট হয়ে যাওয়ার পর প্রথম ওভারেই আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে খেলেছেন কিউই ওপেনার টম ল্যাথাম। শরিফুলের ওভারে মেরেছেন দুটি চার। কনওয়ের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওভারে মিরাজের বলে লেগ বিফোরের আবেদনও ওঠে। আম্পায়ার সাড়া না দিলে রিভিউ নিয়েছিলেন শান্ত। কিন্তু ইমপ্যাক্ট স্টাম্পে না থাকায় নষ্ট হয়েছে রিভিউ।  

দিনের প্রথম বলেই শেষ বাংলাদেশের ইনিংস

প্রথম টেস্টের প্রথম দিনে দুই সেশনে বাংলাদেশের ব্যাটিং ছিল আশা জাগানিয়া। কিন্তু শেষ সেশনে একের পর এক উইকেট পতনে ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণ হাতছাড়া হয়েছে। প্রথম দিন শেষে স্বাগতিকদের স্কোর ছিল ৯ উইকেটে ৩১০ রান। ২০ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে দিন শেষ করেছিলেন শরিফুল ইসলাম ও তাইজুল ইসলাম। দ্বিতীয় দিন তাদের ওপর স্কোর বাড়িয়ে নেওয়ার দায়িত্ব ছিল। কিন্তু কিউই পেসার টিম সাউদির আঘাতে প্রথম বলেই পড়েছে বাংলাদেশের শেষ উইকেট। তাতে ৩১০ রানে শেষ হয়েছে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস।

সিলেটে দ্বিতীয় দিনের প্রথম বলে সাউদির মুখোমুখি হয়েছিলেন শরিফুল। কিন্তু কিউই পেসারের লেংথ বলটি খেলতে পরাস্ত হন তিনি। বল প্যাডে লাগলে আবেদন করেন কিউই অধিনায়ক। আম্পায়ার সাড়া না দিলে রিভিউ নেন তারা। তার পরেই মেলে সাফল্য। লেগ বিফোরে আউট হন শরিফুল (১৩)।  

বাংলাদেশ তিনশ প্লাস রানের ভিত পেয়েছে মূলত ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়ের ৮৬ রানের কল্যাণে। নাজমুল হোসেন শান্ত ও  মুমিনুল হক দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৭ রান করেছেন। বাকিরা অবশ্য ইনিংস বড় করতে পারেননি। 

নিউজিল্যান্ডের হয়ে ৫৩ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন অফ স্পিনার গ্লেন ফিলিপস। দুটি করে নিয়েছেন কাইল জেমিসন, এজাজ প্যাটেল। একটি করে নিয়েছেন টিম সাউদি ও ইশ সোধি।