স্পোর্টস ডেস্ক
আগামী ২৬ ডিসেম্বর সেঞ্চুরিয়নে প্রথম টেস্ট খেলবে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা। এই ম্যাচ হতে যাচ্ছে ডিন এলগারের শেষের শুরু। দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক টেস্ট অধিনায়ক ও ওপেনিং ব্যাটার দুই ম্যাচের সিরিজ শেষে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ইতি টানছেন।
ভারতের বিপক্ষে দুটো ম্যাচেই একাদশে থাকলে এলগার তার ১২ বছরের ক্যারিয়ার শেষ করতে যাচ্ছেন ৮৬ টেস্ট খেলে। ৩৬ বছর বয়সী ব্যাটার বলেছেন, ‘ক্রিকেট খেলা সবসময় আমার স্বপ্ন ছিল। কিন্তু দেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে পারা ছিল সেই স্বপ্নের চূড়ান্ত সীমা। ১২ বছর ধরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সেই সুযোগ পাওয়া ছিল এক কথায় অবিশ্বাস্য। এটা ছিল দারুণ একটা পথচলা যার জন্য নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি। কেপটাউন টেস্ট হতে যাচ্ছে আমার শেষ। আমার সবচেয়ে প্রিয় স্টেডিয়াম, যে জায়গায় আমি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আমার প্রথম টেস্ট রান করেছিলাম এবং আশা করি আমার শেষ রানও।’
৫১৪৬ রান নিয়ে এলগার দক্ষিণ আফ্রিকার অষ্টম সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। সাতে থাকা মার্ক বাউচারের চেয়ে ৩৫২ রান পেছনে তিনি। ক্রিকেটবিষয়ক ওয়েবসাইট ক্রিকইনফো জানিয়েছে, লাল বলের কোচ শুকরি কনরাড এলগারকে জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি তার দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনায় নেই। ২০২৪ মৌসুমে বিদেশি খেলোয়াড় হিসেবে এসেক্সে খেলবেন এই ব্যাটার।
এলগারের এই সিদ্ধান্তে নিউজিল্যান্ডে কম শক্তির দল নিয়ে দুটি টেস্ট খেলতে হবে দক্ষিণ আফ্রিকাকে। একই সময়ে এসএ২০ লিগে খেলার কারণে সামনের সারির অনেক খেলোয়াড়কে পাবে না জাতীয় দল। এই ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে চুক্তিবদ্ধ নেই এলগার। সেক্ষেত্রে নিউজিল্যান্ড সফরে দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ খেলোয়াড় হতে পারতেন তিনি, টেম্বা বাভুমার অনুপস্থিতিতে তার কাঁধেই নেতৃত্ব উঠতো। এলগার দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১৭ টেস্টে নেতৃত্ব দিয়ে জিতেছেন নয়টি।
২০১২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার অস্ট্রেলিয়া সফরে পার্থে অভিষেক হয় এলগারের। ওই সময় প্রোটিয়ারা র্যাঙ্কিংয়ে বিশ্বের এক নম্বর। শুরুটা ভালো ছিল না। ৩৮তম খেলোয়াড় হিসেবে অভিষেকে পেয়ারের লজ্জা পান, যা এখন বেড়ে ৪৫ জনে ঠেকেছে। তবে তৃতীয় ম্যাচে সেঞ্চুরি করেন তিনি। সব মিলিয়ে ১৩ সেঞ্চুরি তার, কেবল পাকিস্তান ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শতকের দেখা পাননি।
২০১৭ সালে ইংল্যান্ড সফরে ফাফ ডু প্লেসি পিতৃত্বকালীন ছুটি নেওয়ায় অধিনায়ক হন এলগার। দুই বছর পর পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই টেস্টে আবারও অধিনায়কত্ব করেন। ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময়ে স্থায়ীভাবে নেতৃত্ব দেওয়া হয় তাকে। গত বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজে এবং ভারতের বিপক্ষে দেশের মাটিতে সিরিজ জেতে তার দল। এছাড়া নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ ড্র করে প্রোটিয়ারা। তাতে করে ওই সময় বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের টেবিলে এক নম্বরে উঠেছিল।
কিন্তু ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে হেরে গিয়ে এই বছরের ফাইনালে খেলা হয়নি। তারপর ফেব্রুয়ারিতে কোচিং স্টাফ অদলবদলের পর এলগার অধিনায়কত্ব হারান। খেলতে থাকেন বাভুমার অধীনে। জানা যায়, অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তে নাখোশ ছিলেন এলগার। যদিও মার্চের শেষে নতুন কেন্দ্রীয় চুক্তিতে সম্মতি জানান। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্রে দক্ষিণ আফ্রিকার কেবল দুটি টেস্ট সিরিজ থাকায় তিনি দেশের মাটিতে ক্যারিয়ার শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
আপনার মতামত লিখুন :