শান্তর পিচ্ছিল হাতে ফসকে গেলো ম্যাচও


Assroy প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ৯, ২০২৩, ১১:০৭ পূর্বাহ্ন /
শান্তর পিচ্ছিল হাতে ফসকে গেলো ম্যাচও

আশ্রয় ডেস্ক

বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিংয়ের মূল স্তম্ভ ছিলেন গ্লেন ফিলিপস। প্রথম ইনিংসে কিউই এই ব্যাটারের ৮৯ রানের ইনিংসে ৮ রানের লিড পায় সফরকারীরা। দ্বিতীয় ইনিংসেও খেললেন ৪০ রানের অপরাজিত ইনিংস। তার এই দুই ইনিংসই মূলত ঢাকা টেস্টের ভাগ্য গড়ে দিয়েছে।

অথচ দ্বিতীয় ইনিংসে রানের খাতা খোলার আগেই ফিরে যেতে পারতেন ফিলিপস। কিন্তু স্লিপে দাঁড়ানো শান্তর পিচ্ছিল হাত কিউই অলরাউন্ডারের ক্যাচ নিতে ব্যর্থ হয় পুরোপুরি। তার পর বাংলাদেশের কাছ থেকে ম্যাচটি ছিনিয়ে নিয়ে গেছেন কিউই এই ব্যাটার। স্যান্টনারকে সঙ্গে নিয়ে অবিচ্ছিন্ন জুটিতে বাংলাদেশকে হারিয়েছেন ৪ উইকেটের ব্যবধানে। তাতে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে মূল্যবান ১২টি পয়েন্ট হারিয়েছে শান্ত বাহিনী।

টেস্ট চ্যম্পিয়নশিপেরে প্রথম দুই আসরে নিচের দিকে ছিলে বাংলাদেশের অবস্থান। তৃতীয় আসরটি শুরু হয়েছিল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে হোম সিরিজ দিয়ে। বাংলাদেশের সামনে সুযোগ ছিল পুরো ২৪ পয়েন্ট তুলে নেওয়ার। সিলেটে স্পোর্টিং উইকেটে দারুণ ব্যাটিং-বোলিংয়ে কিউইদের বিপক্ষে ১৫০ রানে বড় ব্যবধানের জয়ে সেই মঞ্চ তৈরিও হয়েছিল। তাতে ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাওয়া গেছে প্রথম জয়ের স্বাদ। তার পর ছিল সিরিজ জয়ের হাতছানি। 

সিলেটে দারুণ জয়ের পর ঢাকাতে এই ফলের প্রত্যাশা বাড়াবাড়ি ছিল না। মিরপুরে স্পিন বান্ধব উইকেট বানিয়ে প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলার কৌশল নিয়েছিল স্বাগতিকরা। কিন্তু পরে নিজেদের পাতা ফাঁদেই তাদের পা দিতে হয়েছে। স্পিন বান্ধব উইকেটে বাংলাদেশের ব্যাটাররা কৌশলি হতে পারেননি। দুই ইনিংসের একটিতেও দুইশ পেরুতে পারেনি। প্রথম ইনিংসে কোনওমতে ১৭২ রান করলেও দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪৪ রানেই শেষ হয় স্বাগতিকদের ইনিংস। সফরকারী দলের স্পিনার এজাজ প্যাটেল, মিচেল স্যান্টনার, গ্লেন ফিলিপসের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন তারা। যার ফলটা হয়েছে মারাত্মক। শান্ত-মুশফিক-জয়রা নিজেদের মাঠে কৌশলী হয়ে ব্যাটিং করতে না পারার খেসারত দিয়েছে।

ঢাকা টেস্টের প্রথম দিন শেষে বাংলাদেশ দলের অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ জানিয়েছিলেন, ঢাকা টেস্টের উইকেটে ব্যাটিং করা কঠিন। তবে ব্যাটারদের কমিটমেন্ট থাকলে রান করা সম্ভব। সেই মিরাজ নিজেই কমিটমেন্ট দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আউট হয়েছেন বাজে শটে। শুধু মিরাজ নন, জাকির ছাড়া দলের অন্য কোন ব্যাটার কথা রাখতে পারেননি। যার ফলে নিউজিল্যান্ডকে মোটে ১৩৭ রানের লক্ষ্য দিতে পেরেছে।

ঢাকা টেস্টের উইকেট যতই কঠিন হোক না কেন, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এই লক্ষ্য খুব বেশি হওয়ার কথা নয়! তারপরও ম্যাচটা বের করার সুবর্ণ সুযোগ ছিল বাংলাদেশের। ঠিকঠাক ক্যাচগুলো নিতে পারলেই হতো। কিন্তু পরে বেশ কয়েকটি ক্যাচ মিসের মাশুল গুণতে হয়েছে পুরো দলকে। অধিনায়ক শান্তই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ক্যাচটি মিস করেছেন। মিরাজের বলে প্রথম স্লিপে ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন ফিলিপস। তার পর তো জীবন পাওয়া ফিলিপসই এনে দেন জয়। খেলেছেন ৪৮ বলে ৪০ রানের আক্রমণাত্মক ইনিংস।

বাংলাদেশের ব্যাটাররা ব্যর্থ হলেও উইকেট ও কন্ডিশনের সুবিধা কাজে লাগিয়ে দারুণ বোলিং করেছে বাংলাদেশের বোলাররা। বিশেষ করে তাইজুল ছিলেন ভয়ঙ্কার। সিলেট টেস্ট জয়ের নায়ক তাইজুল নিয়েছেন ৫টি উইকেট। আগের টেস্টে দশ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। সবমিলিয়ে ১৫ উইকেট নিয়ে সিরিজ সেরা হয়েছেন তাইজুল।