বিএনপি-জামায়াত ও সমমনা দলগুলোর ডাকা চতুর্থ দফার অবরোধের প্রথম দিনে চট্টগ্রামে জনজীবনে দৃশ্যমান প্রভাব পড়েনি। নগরের বিভিন্ন সড়কে গণপরিবহন চলাচল প্রায় স্বাভাবিক ছিল। স্বাভাবিক ছিল ট্রেন ও লঞ্চ চলাচল। দৈনন্দিন কাজের প্রয়োজনে যে যার মতো বেরিয়েছেন। দোকানপাট এবং অফিস-আদালত খুলেছে। তবে বন্দর নগরী চট্টগ্রামে থেকে খুব কম সংখ্যক দূরপাল্লার বাস ছেড়ে গেছে।
রোববার (১২ নভেম্বর) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নগরের বহদ্দারহাট, চকবাজার, জিইসি, মুরাদপুর, ২ নম্বর গেট, লালদীঘি ও প্রবর্তকমোড়সহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জনজীবন প্রায় স্বাভাবিক দেখা গেছে, যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক ছিল। চলেছে গণপরিবহণ বাস, টেম্পো, লেগুনাসহ অন্যান্য যানবাহন। তবে সড়কে ব্যক্তিগত যানবাহনের সংখ্যা ছিল কম।
চট্টগ্রাম নগরীর কোনো কোনো মোড়ে যানজট দেখা গেছে। বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের শান্তি সমাবেশ করতে দেখা গেছে। তবে কোথাও বিএনপিসহ অবরোধ সমর্থকদের দেখা যায়নি। যদিও বিএনপির দপ্তর থেকে কোনো কোনো স্থানে ঝটিকা মিছিল করেছে বলে জানানো হয়েছে।
চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কফিল উদ্দিন বলেন, অবরোধের আগের দিন (শনিবার) রাত থেকে আজ (রোববার) সন্ধ্যা পর্যন্ত চট্টগ্রামে কোনো যানবাহনে অগ্নিসংযোগের খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে সর্বাত্মক অবরোধের প্রভাব পড়েনি ট্রেন চলাচলে। চট্টগ্রাম থেকে যথাসময়ে ছেড়ে গেছে সবকটি ট্রেন। একইভাবে পৌঁছেছে চট্টগ্রামগামী সব ট্রেন। চট্টগ্রামের সদরঘাট থেকে ভোলা, হাতিয়া ও বরিশালের উদ্দেশ্যে সবকটি লঞ্চ ছেড়ে গেছে এবং সিডিউল অনুযায়ি সবকটি লঞ্চ চট্টগ্রামে পৌঁছেছে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘আমরা অবরোধেও গাড়ি চালাচ্ছি। নগরীতে সব ধরনের গণপরিবহন সচল আছে। অবরোধের শুরু থেকে আমাদের দুটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এর মধ্যে একটি ইপিজেড থানাধীন সলগোলা ক্রসিং এলাকায় অপরটি নগরীর জিইসি মোড়ে। বিষয়টি আমরা সরকারের সংশ্লিষ্টদের অবহিত করেছি।’
চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবির বলেন, ‘সড়কে অবরোধের কোনও চিহ্ন নেই। সব ধরনের যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক আছে। কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।’
গত ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশে হামলা, হত্যা, গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এবং সরকার পতনের এক দফা দাবিতে এর আগে ২৯ অক্টোবর হরতাল এবং ৩১ অক্টোবর, ১ ও ২ নভেম্বর মোট তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি-জামায়াত ও তাদের শরিকরা। তারপর ৫ ও ৬ নভেম্বর দ্বিতীয় দফায়, ৮ ও ৯ নভেম্বর তৃতীয় দফায় অবরোধ কর্মসূচি পালন করে তারা। আর রোববার থেকে শুরু হলো চতুর্থ দফায় ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ।
আপনার মতামত লিখুন :