রাজধানীর দনিয়া কলেজের সামনে আজ বুধবার সন্ধ্যায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সময় তাজুল ইসলাম (১৭) নামের এক কিশোর ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছে। ওই ঘটনায় আহত মো. সায়েম নামের আরেক কিশোরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাজুল ইসলাম এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী।
যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মফিজুল আলম আজ রাতে প্রথম আলোকে বলেন, আজ সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে এলাকার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দনিয়া কলেজের সামনে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। দুই পক্ষের হাতেই ছিল ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা। রক্তাক্ত অবস্থায় তাজুল ও সায়েমকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ সময় চিকিৎসক তাজুলকে মৃত ঘোষণা করেন। সায়েম একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সায়েম দাবি করেছে, নিহত কিশোরকে সে চেনে না। সে প্রথম আলোকে জানায়, সে ও তার দুই বন্ধু মুশফিক ও সাকিব সন্ধ্যার দিকে দনিয়া কলেজের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল। এ সময় কিছু কিশোর-তরুণের মধ্যে মারামারি হচ্ছিল। এর মধ্যে হামলাকারী কয়েকজন এসে প্রশ্ন করে, ‘তুই কোন গ্রুপের? এ সময় সে (সায়েম) তাদেরকে জানায়, সে কোনো গ্রুপের নয়। এরই মধ্যে কিছু বুঝে ওঠার আগে হামলাকারীরা আমার মাথায় ও শরীরে ছুরিকাঘাত করে।’
ছেলের ওপর হামলার খবর শুনে সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে আসেন তাজুলের মা পপি বেগম ও মামা আসিফুর রহমান। এ সময় পপি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে মেঝেতে বসে বুক চাপড়ে কাঁদছিলেন আর বলছিলেন, তাজুল আজ বিকেলে পরীক্ষা দিয়ে বাসায় আসে। খাওয়াদাওয়ার পরে ‘মা আমি একটু ঘুরে আসি’ বলে বাসা থেকে বের হয়। এই যাওয়া যে তার শেষ যাওয়া, তা তার মা বুঝতে পারেননি। পপি বেগমকে সান্ত্বনা দিতে গিয়ে তাঁর ভাই আসিফুরও কান্না ধরে রাখতে পারেননি।
তাজুল সপরিবারের সঙ্গে জুরাইনের মুরাদপুরের কদারবাজারে থাকত। সে ছিল মা-বাবার একমাত্র ছেলে। তাজুলের বাবা মোশারফ হোসেন কাতারপ্রবাসী।
আপনার মতামত লিখুন :