‘আমি ফেরেশতাও না শয়তানও না’ উল্লেখ করে ক্ষমা চাইলেন ইনু


Assroy প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ২২, ২০২৩, ১:০৫ অপরাহ্ন /
‘আমি ফেরেশতাও না শয়তানও না’ উল্লেখ করে ক্ষমা চাইলেন ইনু

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, ‘আমি মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক নিয়ে এই ভোটে অংশগ্রহণ করছি। এটা একটি নির্বাচনি পথসভা। সেই পথসভায় আমি আপনাদের সামনে দাঁড়িয়ে প্রথমে আমি আমার কৈফিয়ত দিতে চাই। ২০০৮ সাল থেকে আজ অবধি প্রায় ১৫ বছর আপনাদের প্রতিনিধি হিসেবে আমি দায়িত্ব পালন করে আসছি। আমি শয়তানও না, ফেরেশতাও না। ফেরেশতা ও শয়তান ভুল করে না। আমি মানুষ, এই দীর্ঘ ১৫ বছর আপনাদের সঙ্গে চলতে ফিরতে, চলার পথে হয়তো দু-একটা ভুল ত্রুটি হতে পারে।’

‘আপনাদের সব দাবি আমি পূরণ করতে নাও পারি। আপনাদের সব স্বপ্ন আমি পূরণ করতে হয়তো পারিনি। তাই প্রথমে আমি একজন এমপি হিসেবে, আমি যেটুকু ভুল-ত্রুটি করেছি বা কোন কারণে খারাপ ব্যবহার করেছি, তার জন্য হাত জোড় করে আমি মাফ চেয়ে নিচ্ছি।’

বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) বিকালে কুষ্টিয়ার মিরপুর বাজারে জাসদ আয়োজিত নির্বাচনি পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। 
 
ইনু বলেন, ‘একইসঙ্গে বলবো- আমি যদি আবার দায়িত্বপ্রাপ্ত হই তাহলে যে ভুলগুলো আমার হয়েছে, সেই ভুলগুলো আমি শুধরে নেবো। আমি আরও ভালো করে আপনাদের সেবা করার চেষ্টা করবো। আমি এটাও বলছি এই নির্বাচনি পথসভায় যে দীর্ঘ ১৫ বছরে আমি আপনাদের এলাকার, পারিবারিক ও দাবি যেগুলো করেছেন, আমি পূরণ করার চেষ্টা করেছি।’

ইনু তার নির্বাচনি এলাকার উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরে বলেন, ‘রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজ, মন্দির শ্মশান, গোরস্থান-মসজিদের কথা বলুন, আমি আমার সাধ্যমতো সরকারি বরাদ্দ এনে কাজ দিয়েছি এবং আপনাদের সাক্ষী রেখে বলতে চাই এই বরাদ্দ থেকে আমি ইনু একটা টাকা চুরি করিনি। কেউ যদি প্রমাণ করতে পারেন তাহলে রাজনীতি ছেড়ে দেবো। জনগণের আমানত আমি খেয়ানত করিনি।’

জাসদ সভাপতি বলেন, ‘এই ১৫ বছরে আমার সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি। অনেকেই বলেন, উন্নয়ন নাকি হয়নি। আমি এটা নিয়ে কোন তর্কে লিপ্ত হতে চাই না। যারা আমার তৈরি করা রাস্তার ওপরে দাঁড়িয়ে, আমার তৈরি করা স্কুল ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে বলে যে উন্নয়ন হয়নি তাদেরকে আমি কী আর বলবো? যে রাস্তা দিয়ে আপনারা এসেছেন সেটি সেই পাকা রাস্তা। আমি কমবেশি উপকার করতে পারি হয়তো। কিন্তু কারোর ক্ষতি করিনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি বঙ্গবন্ধুর পাশে দাঁড়িয়ে তার নির্দেশে যুদ্ধ করেছি। তারপরে একদিনও ঘুমাতে পারিনি। বাংলাদেশকে সামরিক শাসকদের কাছ থেকে, সাম্প্রদায়িকতা থেকে, বিদেশি চক্রান্ত থেকে বাঁচানোর জন্য আমি শেখ হাসিনার পাশে অতন্দ্র প্রহরীর মতো দাঁড়িয়ে লড়াই চালিয়ে গেছি। দিনের পর দিন জেল খেটেছি। জেল-জুলুম, অত্যাচার ছিল কিন্তু মাথা নত করিনি। এখনও শেখ হাসিনার পাশে দাঁড়িয়ে আমি কঠিনভাবে লড়াই চালাচ্ছি, যাতে নির্বাচনটা হয়। যাতে আগুন সন্ত্রাস ও জঙ্গি তাণ্ডব থেকে দেশটা বাঁচে। যাতে একটা কারচুপি মুক্ত, সন্ত্রাস মুক্ত শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়। আমি এখনও শেখ হাসিনার পাশে দাঁড়িয়ে বিদেশি চক্রান্তের থেকে, তাবেদার সরকার গঠনের চক্রান্ত থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করার জন্যে কঠিন লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি।’

মিরপুর উপজেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক আহমদ আলীর সভাপতিত্বে পথসভায় উপস্থিত ছিলেন- মিরপুর পৌরসভার মেয়র হাজী ইনামুল হক, স্থানীয়  ফুলবারে ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আতাহার আলী প্রমুখ।