টানা দ্বিতীয় দিনে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা দিনাজপুরে


Assroy প্রকাশের সময় : জানুয়ারী ১৪, ২০২৪, ১২:৫১ অপরাহ্ন /
টানা দ্বিতীয় দিনে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা দিনাজপুরে

দিনাজপুর প্রতিনিধি

টানা দ্বিতীয় দিনের মতো দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে উত্তরের জেলা দিনাজপুরে। শীতে এই এলাকার মানুষের জীবনযাত্রা দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। শীত প্রভাব বিস্তার করেছে পশু-পাখি ও কৃষিতেও। 

দিনাজপুর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, রবিবার (১৪ জানুয়ারি) এই জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ৯০ শতাংশ ও গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায় দুই কিলোমিটার।

এর আগে শনিবার এই জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ৯৭ শতাংশ এবং গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায় চার কিলোমিটার। এই দুই দিনেই যে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে তা সারা দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন

আবহাওয়াবিদদের ভাষায়, বর্তমানে এই জেলায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বিরাজ করছে।

অবশ্য গত কয়েকদিন ধরেই এই জেলার তাপমাত্রা নিম্নমুখী। গত বুধবার এই জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১ দশমিক ৭, বৃহস্পতিবার ১১ দশমিক শূন্য ও গত শুক্রবার এই জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস। 

নিম্নমুখী তাপমাত্রা এবং শেষ পর্যন্ত শৈত্যপ্রবাহের প্রভাব জনজীবনে স্থবিরতা নিয়ে এসেছে। খুব একটা প্রয়োজন ছাড়া মানুষজন ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। রাস্তাঘাটগুলো একেবারেই ফাঁকা প্রায়। সকাল ১০টার সময়ও দেখা গেছে রাস্তাঘাটে যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে চলাচল করছে। প্রায় প্রতিদিনই সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গেই নামছে ঘন কুয়াশা, যা থাকছে পরের দিন দুপুর পর্যন্ত। 
ঘন কুয়াশা আর মেঘের আড়ালেই থেকে যাচ্ছে সূর্য। গত দুই দিন ধরেই সূর্য উঠছে দুপুরের পর। রোদের তেজ একেবারে নেই বললেই চলে।

শীতের এই অবস্থাতে খেটে খাওয়া ও নিম্নআয়ের মানুষেরা বিপাকে পড়েছেন। তাদের আয়-উপার্জনে ভাটা পড়েছে। পশু-পাখি কিংবা কৃষিক্ষেত্রেও এর প্রভাব পড়েছে।

দিনাজপুরের নয়নপুর এলাকার কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, এই শীতের কারণে আমরা বড় দুঃশ্চিন্তায় রয়েছি। অন্য মৌসুমে আবহাওয়ার কারণে ফসলের তেমন ক্ষতি হয় না। কিন্তু এই শীতে কুয়াশার কারণে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এই শীত যত দ্রুত চলে যায় ততই আমাদের জন্য মঙ্গল।

কালিতলা এলাকার সিরাজুল ইসলাম বলেন, খুব সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে দেখি ধোয়ার মতো কুয়াশা। কিছু দেখা যায় না। আর কনকনে ঠান্ডা। রাস্তাঘাটে অটোরিকশাও কম, লোকজনও কম। গত কয়েকদিন ধরেই এই অবস্থা চলছে।

রাজবাড়ী এলাকার লতিফুল ইসলাম বলেন, এই এলাকার মানুষের মধ্যে শীতবস্ত্রের চাহিদা দেখা দিয়েছে। দুস্থ মানুষেরা এই শীতে অনেক কষ্ট পাচ্ছে। শুধু মানুষের মধ্যেই নয়, এই শীতে গরু-ছাগলসহ পশু-পাখিও কষ্ট পাচ্ছে। 

দিনাজপুর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের আবহাওয়া সহকারী আসাদুজ্জামান জানান, এই নিম্নমুখী তাপমাত্রা আরও দুই/তিন দিন স্থায়ী হবে। এরপর ধীরে ধীরে তাপমাত্রা বাড়বে। ফলে শৈত্যপ্রবাহের যে প্রভাব তা কেটে যাবে।