রাজশাহীতে করোনা রোগী বাড়ছেই || স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই


Assroy প্রকাশের সময় : জুন ১৩, ২০২০, ৪:৫১ পূর্বাহ্ন / ২৭
রাজশাহীতে করোনা রোগী বাড়ছেই || স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে শুরু থেকে রাজশাহী নগরী ও বাইরের উপজেলায় ব্যাপক সচেতনতামুলক কার্যক্রম চলছে। বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়েছে মানুষের অবস্থান, চলাচল ও যানবাহনের উপর। এতো সচেতনতার পরও রাজশাহী নগরীতে বেড়ে চলেছে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগির সংখ্যা। প্রতিদিন নতুন নতুন রোগি শনাক্তও হচ্ছে। ইতিমধ্যে রাজশাহী নগরীতে ১৮জন করোনা আক্রান্ত রোগি শনাক্ত হয়েছে। এতে হটস্পট হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে রাজশাহী নগরী। আক্রান্তের দিক থেকে আগে উপজেলা পর্যায়ে বেশি থাকলেও সম্প্রতি রাজশাহী মহানগরীতেই করোনার প্রকোপ বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। মানা হচ্ছে না সরকারী বিধিনিষেধ। দোকানপাট থেকে শুরু করে যানবাহনে স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বালাই নেই। চলাচলের মাধ্যম যানবাহনগুলোই ঝুঁকি বাড়াচ্ছে বেশি।

দুরপাল্লার বাসে যেটুকু স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে, ছোট যানবাহনগুলোতে তাও মানা হচ্ছে না। যত্রতত্রভাবে নগরীতে যানবাহন চলার কারণে স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টি মুখেই সীমাবদ্ধ থাকছে। তবে সচেতন মানুষ মনে করছে রাজশাহীতে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে বড় বড় বিষয়গুলো যেমন দেখা হচ্ছে তেমনি ছোট ছোট বিষয়গুলো দেখা দরকার। বড় বিষয়গুলো দেখতে গিয়ে ছোট ছোট বিষয় এড়িয়ে চলা হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধির মধ্যে ওই ছোট বিষয়গুলো থাকলেও তা কেউ মানছে না। বিশেষ করে নগরী ও নগরীর বাইরে চলাচল করা যানবাহনগুলোই এখন করোনা ঝুঁকির প্রধান কারণ হয়ে উঠছে। সে ক্ষেত্রে যানবাহন চলাচলে বিধিনিষেধ ও করণীয় বিষয়গুলো মেনে চললে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে কার্যকর হতে পারে এমনটাও মনে করা হচ্ছে।

দেখা গেছে, স্বাস্থ্যবিধিতে বলা হয়েছে তিনফুট দুরত্বের কথা। যানবাহন চলাচলের সময় বাসে সিট প্রতি একজনের বেশি যাত্রী নেয়া যাবে না। অটোরিক্সায় চারজনের বেশি যাত্রী নেয়া যাবে না। বাসে বা অটোরিক্সায় যাত্রী উঠানোর সময় জীবানুনাশক স্প্রে করতে হবে। দিনে যতবার যাত্রী উঠানো হবে ততবার যানবাহনে জীবাণুনাশক ওষুধ স্প্রে করতে হবে। কিন্তু নগরীতে চলাচল করা অটোরিক্সা চালকরা বিষয়টি গুরুত্ব দিচ্ছেন না। নিজের সুরক্ষার জন্য সকালে মাস্ক পরে অটোরিক্সা নিয়ে বের হচ্ছেন, ফিরছেন সন্ধ্যায়। যাত্রী উঠানোর সময় কোনো ধরনের স্প্রে করা হচ্ছে না। সকাল থেকে অটোরিক্সাগুলো নগরীর এ প্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত পর্যন্ত দাপিয়ে বেড়ালেও তাদের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যাচ্ছে না। আর এসব ছোট ছোট অসচেতনতাই রাজশাহী নগরীকে ঝুকিপুর্ণ করে তুলছে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে সচেতনরা মনে করছেন নগরীতে চলাচল করা অটোক্সিায় যাত্রী উঠানোর সময় জীবানুনাশক স্প্রে ব্যবহার বাধ্যতামুলক করা দরকার। তা না হলে রাজশাহী নগরী আগামীতে আরো ভয়াবহ অবস্থার দিকে যাবে।

এদিকে, নগরী থেকে যেসব সিএনজি বা বাস জেলা উপজেলা পর্যায়ে চলাচল করছে তাদের মধ্যেও সচেতনতার লেশমাত্র চোখে পড়ছে না। সপ্তাহে একদিন বা একবারও বাসে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হয় না। এমনকি বাস বা সিএনজির চালকদেরও নেই স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়। এতে একদিকে যানবাহনে চলাচল করা যাত্রীদের যেমন করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকছে, তেমনি যাত্রীরাও রয়েছেন ঝুঁকির মধ্যে।

আবার নগরীর বাজারগুলো এখন জমজমাট। ব্যবসায়িরা দোকানে কোন ধরনের স্প্রে ব্যবহার করছে না। বেশিরভাগ দোকানেই নেই হ্যান্ডস্যানিটাইজার। মাস্ক ছাড়াই মানুষ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বাজরে।

বিষয়টি নিয়ে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সমর কুমার পাল জানান, আমরা সব সময় অটোরিক্সা চালকদের বিষয়টি বারবার বলছি। কিন্তু তারা মানছে না। স্বাস্থ্যবিধির মধ্যে অটোরিক্সায় যাত্রী উঠানোর সময় জীবানুনাশক স্প্রে করার বিষয়টি চালকদের বলা হচ্ছে। কিন্তু চালকরা তা করছে না। তিনি আরো জানান, ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসন এ ব্যাপারে মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করেছে। অভিযান চালানো হচ্ছে নগরী থেকে উপজেলা পর্যন্ত। যারা নিয়ম মানছে না তাদের জরিমানা ও মামলা দায়ের করা হচ্ছে। এব্যাপারে রাজশাহী সিভিল সার্জান ডা. এনামুল হক বলেন, জেলা প্রশাসন বিষয়গুলো দেখছে। কিন্তু লোকবল সংকটের কারণে সব দিকটা দেখা সম্ভব হচ্ছে না।