আশ্রয় ডেস্ক
বিএনপিসহ যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলোর ডাকা ধারাবাহিক হরতাল ও অবরোধের কারণে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর থেকে দেশের অভ্যন্তরে পণ্য পরিবহনে ট্রাকসংকট সৃষ্টি হয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, স্বাভাবিক সময়ে এই বন্দর থেকে প্রতিদিন ৪৫০ ট্রাক ভারতীয় আমদানি পণ্য খালাস হলেও এখন তা ২০০-তে নেমে এসেছে।
আগের চেয়ে ভাড়া বেড়েছে ট্রাকপ্রতি ৫ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত। এতে ব্যাহত হচ্ছে দেশের অন্যতম এই বন্দরের পণ্য খালাস কার্যক্রম।
বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, গত ছয় দফা জামায়াত-বিএনপির হরতাল অবরোধের কারণে বন্দরে আমদানি পণ্যবাহী ট্রাকের জট সৃষ্টি হয়েছে। বন্দরে আমদানি পণ্যবাহী ভারতীয় এক হাজার ট্রাক খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে।
বন্দরসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, হরতাল-অবরোধের কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে যানবাহনে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটছে। ফলে দেশের অভ্যন্তরে বেনাপোল বন্দর থেকে আমদানি পণ্য বহনের জন্য ট্রাকসংকট দেখা দিয়েছে। তবে হরতাল-অবরোধের বাইরের দিনগুলোতে পণ্য পরিবহন অনেকটা স্বাভাবিক থাকে।
আমদানিকারক ও পরিবহন ব্যবসায়ীরা জানান, বেনাপোল বন্দর ব্যবহার করে রেল ও সড়কপথে সবচেয়ে বেশি পণ্য আমদানি-রফতানি হয় ভারত থেকে। এসব পণ্যের মধ্যে বড় একটি অংশ শিল্পকারখানার যন্ত্রাংশ, উৎপাদনসামগ্রীর কাঁচামাল, রাসায়নিক পদার্থ, অক্সিজেন ও খাদ্যপণ্য রয়েছে।
বেনাপোল ট্রাক ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আজিম উদ্দীন গাজী বলেন, ‘ভারত থেকে পণ্য আমদানি স্বাভাবিক আছে। বেনাপোল বন্দরে কোনও প্রতিবন্ধকতা নেই। কিন্তু দেশের বিভিন্ন স্থানে নাশকতামূলক ঘটনায় চাহিদামতো ট্রাক বন্দরে আসছে না। এতে পণ্য খালাসের পরিমাণ কমেছে। স্বাভাবিক সময়ে বন্দর থেকে প্রায় ৪৫০ ট্রাক পণ্য খালাস হয়। হরতাল ও অবরোধের দিনগুলোতে ট্রাকসংকটের কারণে ১৮০ থেকে ২০০ ট্রাক পণ্য দেশের অভ্যন্তরে পরিবহন হচ্ছে।’
আমদানিকারক রাজু আহমেদ বলেন, ‘হরতাল ও অবরোধের সময় বেশি ভাড়া দিয়েও ট্রাক মেলে না। বেনাপোল থেকে ঢাকায় এক ট্রাক পণ্য সরবরাহের জন্য অতিরিক্ত ৫ হাজার এবং চট্টগ্রামে পণ্য নিতে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।’
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কাস্টমসবিষয়ক সম্পাদক আবদুল লতিফ বলেন, ‘কাস্টমসের কাজে কোনও প্রতিবন্ধকতা নেই। তবে হরতালে ও অবরোধে বন্দরে ট্রাকসংকট দেখা দিয়েছে। এতে জরুরি আমদানি পণ্য সব গন্তব্যে পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না।’
বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক রেজাউল করিম (ট্রাফিক) বলেন, ‘হরতাল ও অবরোধে বেনাপোল বন্দরের বাণিজ্যে কিছুটা বিরূপ প্রভাব পড়েছে। গত রবিবার ভারত থেকে আমদানি হয়েছে ৩৬৮ ট্রাক পণ্য। রফতানির পরিমাণ ছিল ১৫৬ ট্রাক পণ্য। ভারত থেকে পচনশীল খাদ্যপণ্য এসেছে ২৬ ট্রাক। বন্দরে প্রায় এক হাজার ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাক খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে।’
আপনার মতামত লিখুন :