৫ দিন আগেই বিদায় নিলেন বরিশালের মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ, চাইলেন ক্ষমা


Assroy প্রকাশের সময় : নভেম্বর ৯, ২০২৩, ৮:৩৭ পূর্বাহ্ন /
৫ দিন আগেই বিদায় নিলেন বরিশালের মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ, চাইলেন ক্ষমা

বরিশাল প্রতিনিধি

নির্ধারিত সময়ের পাঁচ দিন আগে বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন। একইসঙ্গে চতুর্থ পরিষদের ১ নম্বর প্যানেল মেয়র গাজী নঈমুল হোসেন লিটুর কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। এরপর সিটি করপোরেশনের কর্মচারীরা ফুল ছিটিয়ে এবং নেতাকর্মীরা স্লোগানে স্লোগানে তাকে বিদায় জানান।

বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় নগর ভবনে উপস্থিত হয়ে অব্যাহতিপত্রে স্বাক্ষর করেন সাদিক আব্দুল্লাহ। অব্যাহতিপত্র প্রদান করেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী বরাবর। এ সময় প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সচিব ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা উপস্থিত না থাকায় দায়িত্বরতরা অব্যাহতিপত্র ই-মেইলে সচিবালয় পাঠান।

দায়িত্ব হস্তান্তরের পর নগর ভবনের সামনে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় সাদিক আব্দুল্লাহ নগরবাসী কাছে ক্ষমা চান। একইসঙ্গে নতুন মেয়রকে সহযোগিতা করার জন্য নগর ভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি দাবি করেন, তার যাওয়ার আগ পর্যন্ত সবার বেতন পরিশোধ করেছেন। এরপর নেতাকর্মী বেষ্টিত হয়ে নগর ভবন থেকে কালিবাড়ি রোড সেরনিয়াবাত বাসভবনে পায়ে হেঁটে যান তিনি।

এর আগে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মেয়র সাদিক বলেন, আগামীকাল ও পর দিন শুক্র ও শনিবার থাকায় নবনির্বাচিত মেয়রের হাতে সময় থাকে মাত্র তিন দিন। নতুন মেয়রের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য আনুষ্ঠানিকতা করতে কোনও সমস্যায় না পড়তে হয় এ জন্য পাঁচ দিন আগে সরে দাঁড়ালেন। এর আগে তিনি নতুন মেয়রের যোগদান উপলক্ষে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সভা করেছেন। 

তিনি প্রশ্ন রাখেন, নগর ভবনে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিব নেই- সেখানে আমি থেকেই বা কী করবো?

নগরবাসীর উদ্দেশে সাবেক মেয়র বলেন, আমার ভুলত্রুটি থাকলে ক্ষমা করে দেবেন। আমি নগরবাসীর সঙ্গে ছিলাম ভবিষ্যতেও থাকবো। প্রধানমন্ত্রী আমাকে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক করেছেন, নগরবাসীর জন্য কাজ করতে। সেখান থেকেও আমার দায়িত্ব রয়েছে নগরবাসীর প্রতি।

এরপর সাবেক মেয়র নতুন মেয়রকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। একইসঙ্গে নগর ভবনে কর্মরতদের নতুন মেয়রকে সহযোগিতা করতে বলেন। তাদের সহযোগিতা ছাড়া কোনও মেয়র কাজ করতে পারবে না বলে জানান তিনি।

নতুন মেয়রের উদ্দেশে বলেন, মূলত নগর ভবনের প্রশাসনিক কাঠামো গোছানো এবং দুর্নীতিমুক্ত করা হবে তার জন্য চ্যালেঞ্জ। নগর ভবনের দুর্নীতির দিক নজর দেওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।

নগর ভবনে উপস্থিত না থাকলেও মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে প্রশাসনিক কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা স্বপন কুমার দাস বলেন, সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বরাবর আবেদন করে অব্যাহতি নিয়েছেন। তার অব্যাহতিপত্র সচিবালয় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার অব্যাহতির পর রুটিন মাফিক প্যানেল মেয়র-১ ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পালন করবেন।

এদিকে পাঁচ বছর দায়িত্ব পালনকালে সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ ১০ দিন নগর ভবনের মেয়রের কক্ষে স্বল্প সময় অফিসের কার্যক্রম পরিচালনা করেন। বিদায় নিয়েছেন ওই কক্ষ থেকেই। মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর নগর ভবনের অপর একটি ভবন বিবিরপুকুর পাড় সংলগ্ন অ্যানেক্স ভবনে তার নিজস্ব কার্যালয়ে গড়ে তোলেন। বিদেশি থেকে শুরু করে কোনও ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিরা তার সঙ্গে দেখা করতে এলে ওই কক্ষে দেখা করতেন। এ ছাড়া বেশিরভাগ সময় তিনি তার কালিবাড়ি রোডের সেরনিয়াবাত ভবনে থেকেই সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম পরিচালনা করতেন।

আগামী ১৪ নভেম্বর সকাল ১০টায় বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন নবনির্বাচিত মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত। এ জন্য চলছে ব্যাপক আয়োজন।