জিম্মিদের মুক্তি দিয়ে হামাসের কী লাভ?


Assroy প্রকাশের সময় : নভেম্বর ২৫, ২০২৩, ১২:৩৭ অপরাহ্ন /
জিম্মিদের মুক্তি দিয়ে হামাসের কী লাভ?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যকার চারদিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) বেশ কয়েকজন জিম্মি ও বন্দি বিনিময় হয়েছে। এ বিরতির দ্বিতীয় দিন আজ। শনিবার (২৫ নভেম্বর) ব্রিটিশি সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় দিনে হামাসের হাতে জিম্মি ১৪ জনকে মুক্তি দেওয়া হবে। এর বিনিময়ে ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি ৪২ জন ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ। একইভাবে যুদ্ধবিরতির বাকি দুই দিনও শর্তানুযায়ী বন্দি বিনিময় চলবে। দুপক্ষের মধ্যে এই যে বন্দি বিনিময় চলছে, এতে হামাসের কী লাভ, কেনই বা হামাস শতাধিক ইসরায়েলিকে বন্দি করে আবার মুক্ত করে দিচ্ছে— এ প্রশ্নের সম্ভাব্য জবাব খুঁজেছেন কিংস কলেজ লন্ডনের সিকিউরিটি স্টাডিজের অধ্যাপক ড. পিটার আর. নিউম্যান। শনিবার বিসিসি’র একটি প্রতিবেদনে এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. পিটার যা বললেন, তা তুলে ধরা হলো:

ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির চুক্তি চলমান সংঘাতের একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার সুযোগ করে দিয়েছে। তবে এটি জিম্মি সংকটের সমাপ্তি বা সমাপ্তি শুরু হওয়ার কোনও ইঙ্গিত দিচ্ছে না। এই বন্দি বিনিময়ের মাধ্যমে যদি প্রাপ্তির কিছু থেকে থাকে সেটি পাচ্ছে হামাস। এর মাধ্যমে হামাস ইসরায়েলি কারাগারে থাকা ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্ত করছে।

অধ্যাপক ড. পিটার বলেন, ‘চুক্তির আওতায় আগামী কয়েকদিনে বেশ কয়েকজন ইসরায়েলি বৃদ্ধ, নারী ও শিশু জিম্মিরা মুক্তি পাবেন। তাদেরকে বিশাল ত্রাণ সহায়তা নিয়ে স্বাগত জানাতে চলেছে ইসরায়েল। এর মানে, হামাস ১৫০ জনের বেশি জিম্মিকে ধরে রাখলে আদতে তারাই লাভবান হবে।’

হামাস কীভাবে লাভবান হবে এ বিষয়ে একটি ব্যাখ্যা দাঁড় করিয়েছেন পিটার। তিনি বলেন, ‘একসঙ্গে প্রায় ২৪০ জিম্মি প্রাথমিকভাবে ধরে নিয়ে যাওয়াটা সম্ভবত হামাসের ওপর একটি বিশাল চাপের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। যেহেতু জিম্মিদের ক্রমাগত দেখাশোনা, পর্যবেক্ষণে রাখা এবং প্রয়োজনে অন্যত্র সরানোও লাগতে পারে। এরমধ্যে যদি আবার জিম্মিদের কেউ বৃদ্ধ বা অসুস্থ অথবা কারও বিশেষ চিকিৎসার প্রয়োজন হয়, তবে তা হামাসের জন্য পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলবে।’

পিটার বলেন, “বিশেষ সেবা প্রয়োজন এমন কাউকে ‘ফেরত’ পাঠানোর মাধ্যমে হামাস কোনও ধরনের সহানুভূতি দেখাচ্ছে না। বরং প্রাথমিকভাবে অন্য যেখানেতাদের শ্রম ও সময় প্রয়োজন, তা তারা সেখানে ব্যবহারের জন্য রেখে দিয়েছে।”

‘এই কথার সত্যতা বিশেষ করে থাইল্যান্ড এবং নেপালের আনুমানিক দুই ডজন শ্রমিকের মুক্তির ক্ষেত্রে ভালোভাবেই উপলব্দি করা যায়। কেননা, ইসরায়েলি বা ইহুদি না হওয়ায় হামাসের কাছে তাদের  কৌশলগত কোনও মূল্য নেই।’

আরেকটি কারণ হলো, বাকি যেসব জিম্মি হামাসের কাছে রয়েছে, তারা হয় ইসরায়েলি সেনা বা যুদ্ধ করতে সক্ষম এমন বয়সী পুরুষ। তাই তাদেরকে আটকে রাখাটা ‘বৈধ’ হিসেবে দেখানো হামাসের জন্য সহজ হবে। এ ক্ষেত্রে হামাস তাদেরকে ‘শত্রু যোদ্ধা’ বা যুদ্ধবন্দি বলে যুক্তি দেখাতে পারবে। যা বন্দি বিনিময়ে সম্মত হতে নেতানিয়াহু সরকারকে ব্যাপক চাপে ফেলবে।

কিংস কলেজ লন্ডনের এ অধ্যাপক আরও বলেন, ‘অতীতে যেমন অল্প সংখ্যক ইসরায়েলি সেনার বিনিময়ে ইসরায়েল ফিলিস্তিনের শতাধিক— ক্ষেত্রবিশেষে এক হাজারেরও বেশি কারাবন্দিকে মুক্তি দিতে রাজি হয়েছিল। একইভাবে, এখনও হামাস তার হাজার হাজার সদস্য  যারা বর্তমানে ইসরায়েলি কারাগারে রয়েছেন, তাদের  মুক্তির দাবি জানাবে।’