স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমকে এগিয়ে নিতে  শুরু হচ্ছে ‘বাংলাদেশ স্টার্টআপ সামিট ২০২৪’


assroy প্রকাশের সময় : জুলাই ১৪, ২০২৪, ৪:৪২ অপরাহ্ন /
স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমকে এগিয়ে নিতে  শুরু হচ্ছে ‘বাংলাদেশ স্টার্টআপ সামিট ২০২৪’

আগামী ২৭ থেকে ২৮ জুলাই “স্মার্ট বাংলাদেশ:এন্ডলেস পসিবিলিটিজ” থিম নিয়ে দ্বিতীয় বারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে “বাংলাদেশ স্টার্টআপ সামিট ২০২৪”। রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এশিয়ার দ্রুতবর্ধনশীল সম্ভাবনাময় বাজারগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমকে আরো উচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে এই গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট হতে যাচ্ছে। আজ রোববার বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের ফ্ল্যাগশিপ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানি স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেডের আয়োজনে দুই দিনের এই ইভেন্টে অংশ নেবেন দেশি-বিদেশি স্টার্টআপ, এন্টারপ্রাইজ, ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট, এঞ্জেল ইনভেস্টর, নিয়ন্ত্রক সংস্থা, থিংক ট্যাংক এবং শিল্প বিশেষজ্ঞরা।
সংবাদ সম্মেলনে স্টার্টআপ বা উদ্যোক্তা সংস্কৃতি একটা দেশ ও তার অর্থনীতির এবং অভ্যন্তরীণ উন্নয়নে অনেক বড় ভূমিকা রাখতে পারে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০১০ সাল থেকে শুরু করে বাংলাদেশে ২ হাজার ৫’শ এর অধিক সফল স্টার্টআপ তৈরি হয়েছে। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকটির বিলিয়ন ডলার ভ্যালুয়েশন হয়েছে এবং তারা দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি প্রায় ১৫ লাখ কর্মসংস্থান তৈরি করেছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইনটেল থেকে শুরু করে ওপেন এআই পর্যন্ত সিলিকন ভ্যালী বা বিশ্বের অন্য যেকোন দেশে স্টার্টআপে বিনিয়োগ হয় ইন্টেল্যাকচুয়াল ভ্যালুয়েশনের উপর। কিন্তু আমাদের দেশে বিনিয়োগের এই সংস্কৃতিটা ছিলো না। তাই আমাদের তরুণ প্রজন্মকে সুযোগ করে দিতে আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরামর্শে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড’ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করে দেন, যা আজ বিশ্বে একটা ইউনিক মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের সামনে অসীম সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর গতিশীল নেতৃত্বে গত ১৫ বছরে আমাদের বিমান, সড়ক, নৌ, রেল ও ইন্টারনেট কানেক্টিভিটিসহ যে লজিস্টিকস রেডিনেস তৈরি হয়েছে, সেখানেও আমরা কয়েক হাজার স্টার্টআপ তৈরি করতে পারি। আমাদের স্বাস্থ্য, কৃষি, বিনোদন ও শিক্ষাখাতসহ এখনো অনেক সম্ভাবনা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, যেই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারলে আগামী কয়েক বছরে বাংলাদেশ থেকে আরও কয়েকটি ‘বিলিয়ন ডলার’ ইউনিকর্ন তৈরি হতে পারে।
অনুষ্ঠানে স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামি আহমেদ সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব এবং স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড-এর পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মো. সামসুল আরেফিন, উইন্ডমিল অ্যাডভার্টাইজিং লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সাব্বির রহমান তানিম, কম্যুনিকেশন পার্টনার এশিয়াটিক মাইন্ডশেয়ার লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোরশেদ আলম এবং ম্যানেজিং পার্টনার তাসনুভা আহমেদ টিনা, আমি প্রবাসী লিমিটেড-এর সিইও অ্যান্ড কো-ফাউন্ডার নামির আহমেদ নুরি।
উল্লেখ্য, দুইদিনব্যাপী এ সামিটে ৫৫ টি’র অধিক ভেঞ্চার ক্যাপিটাল এবং বিনিয়োগ সংস্থার পাশাপাশি বহু সংখ্যক অ্যাঞ্জেল বিনিয়োগকারী, স্টার্টআপ উৎসাহী এবং আন্তর্জাতিক স্টার্টআপ হোস্ট করবে। ভারতের ইউনিকর্ন স্টার্টআপ আপগ্রেড-এর এমডি মিঃ মায়াঙ্ক, সিলিকন ভ্যালির গ্লোবাল স্টার্টআপস, বাংলাদেশের বিশিষ্ট প্রতিষ্ঠাতাদের মতো সম্মানিত ব্যক্তিরা মূল অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে থাকবেন। সারা বিশ্ব থেকে শতাধিক বিশিষ্ট বক্তা, ৩০ এর অধিক আকর্ষণীয় সেশনের প্রতিশ্রুতি এই আয়োজনকে আঞ্চলিক স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্টে পরিণত করবে।
সামিটে এআই অ্যান্ড টেকনোলজি, স্টার্টআপ এডুকেশন, দ্য আর্ট অব ফান্ডরেইজিং, ফিনটেক, এডটেক, ক্লাইমেট ভালনারেবিলিটি, ইমপ্যাক্ট ইনভেস্টমেন্ট, লজিস্টিকস, মোবিলিটি অ্যান্ড ই-কমার্স, আরএমজি শোকেসিং এবং ফুড অ্যান্ড অ্যাগ্রিটেক-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোকে কভার করে সেশনের আয়োজন থাকবে।
অংশগ্রহণকারীদের জন্য দিনব্যাপী শোকেস, প্রশিক্ষণ সেশন, নীতি আলোচনা এবং নেটওয়ার্কিং সুযোগ থাকবে। ইভেন্টটি বাংলাদেশ স্টার্টআপ আউটলুকের একটি উদ্বোধনী অধিবেশনের মাধ্যমে শুরু হবে। এরপর ‘লেভারেজিং এআই ইন বাংলাদেশ : টুডে অ্যান্ড দ্য নেক্সট ফাইভ ইয়ারস’-এর সাথে এআই’র ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করা হবে।
এছাড়াও ‘দ্য আর্ট অব ফান্ডরেইজিং’ এবং ‘ফিউচার অব লার্নিং’ আলোচনার মাধ্যমে কভার করা হবে। বৈদ্যুতিক যানবাহন, কৃষি-প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং ফিনটেক নিয়ে শিল্প-নির্দিষ্ট আলোচনা করা হবে। স্টার্টআপদের জন্য এআই-সক্ষম টেক প্রোডাক্ট তৈরি করার এবং কার্যকরভাবে স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম নেভিগেট করার নতুন দক্ষতা অর্জনের সুযোগ থাকবে।
নির্বাচিত স্টার্টআপগুলো সরাসরি অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারীদের কাছে পৌঁছানোর সুযোগ পাবে, যা তাদের বিনিয়োগ এবং সহযোগিতার সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দিবে।
‘বাংলাদেশ স্টার্টআপ সামিট ২০২৪’ ইভেন্টটিতে স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড-এর সাথে সিগনেচার স্পন্সর সুইস অ্যাম্বাসি, কম্যুনিকেশন পার্টনার মাইন্ডশেয়ার, ইভেন্ট পার্টনার উইন্ডমিল, ইকোসিস্টেম ইন্যাবলার পার্টনার ইয়ুথ কো:ল্যাব, হসপিটালিটি পার্টনার ইন্টারকন্টিনেন্টাল, নলেজ পার্টনার লাইটক্যাসেল এবং রেজিস্ট্রেশন পার্টনার সম্পৃক্ত আছে।