বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে অলি আহাদের ভূমিকা থেকে প্রজন্মান্তরে পাওয়া অনুপ্রেরণার উল্লেখ করে বলেছেন, ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক বিজয় সারাবিশ্বে রোমান্টিক রেভ্যুলুশন হিসেবে স্থান করে নেবে।
তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে অলি আহাদ যে ভূমিকা নিয়ে এগিয়ে গিয়েছিলেন সেই ভূমিকায় অনুপ্রাণিত হয়ে তরুণ প্রজন্ম ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক বিজয় এনেছে। সেই বিজয় একদিন সারাবিশ্বে রোমান্টিক রেভ্যুলুশন হিসেবে ইতিহাসে স্থান করে নিবে’।
ড. আবদুল মঈন খান আজ ’৫২’র ভাষা আন্দোলনের নেতা চির বিদ্রোহী, আপোষহীন জননেতা অলি আহাদ এর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে ডেমোক্রেটিক লীগ (ডিএল) এবং অলি আহাদ স্মৃতি সংসদের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত স্মরণসভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, মানুষের সত্যিকার মুক্তির জন্য অলি আহাদ নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন।
তিনি তরুণ প্রজন্মকে অলি আহাদের জীবন থেকে ত্যাগের শিক্ষা গ্রহণের আহবান জানিয়ে বলেন, ব্রিটিশ তাড়ানো আন্দোলন ও মুক্তির সংগ্রামে অলি আহাদের ভূমিকা ছিল সাহসী ও প্রাসঙ্গিক। ব্রিটিশরা চলে গেলেও স্বাধীন পাকিস্তানে পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীন ছিল না। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে অলি আহাদকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিস্কার করা হয়েছিল।
স্মরণসভায় প্রধান বক্তার বক্তৃতায় বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতির অন্যতম প্রধান শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন অলি আহাদ। তার নিষ্ঠা, সততা, স্পষ্টবাদিতা তাঁর প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাশীল করে রেখেছে। অলি আহাদকে অর্থ-বিত্ত-ক্ষমতা আকৃষ্ট করতে পারেনি। অলি আহাদের অনেক কথা অনেকের পছন্দও হয়নি। কিন্তু এসব কথা যুক্তিযুক্ত ছিল বলে কেউ অগ্রাহ্যও করতে পারেনি।
অলি আহাদের কন্যা, বিএনপির কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, রাজনীতিবিদ অলি আহাদ এতবড় মাপের নেতা ছিলেন যার সম্পর্কে বলার যোগ্যতা আমার নেই। তবুও রক্ত কথা বলে। আমার ধমনিতে তাঁর রক্ত প্রবাহিত। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বাবা হচ্ছেন আমার বাবা অলি আহাদ। উনি ছিলেন আমার শিক্ষক, তিনি আমাকে জীবনবোধ শিখিয়েছিলেন।
ডেমোক্রেটিক লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মইনুদ্দীন কাদেরী শওকতের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক খোকন চন্দ্র দাসের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের প্রধান সমন্বয়কারী এনপিপির চেয়ারম্যান সিনিয়র আইনজীবী ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কবি আব্দুল হাই শিকদার, গণদলের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এটিএম গোলাম মাওলা, গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা’র সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার লুৎফর রহমান, এনপিপি’র মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, এনডিপি’র মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, ডিএলএ’র সিনিয়র সহ-সভাপতি সৈয়দ মাজহারুল হক মিঠু, সহ-সভাপতি বাবু সুজন চক্রবর্তী প্রমুখ।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, অলি আহাদ স্পষ্টবাদী নেতা ছিলেন। তিনি সব সময় সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে ছিলেন।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, অলি আহাদ ছিলেন কীর্ত্তিমান রাজনীতিবিদ। ব্যক্তি অলি আহাদ সম্পর্কে সবার উঁচু ধারণা ছিল। তিনি রাজনীতিকে ব্যবহার করে কোনদিন ব্যক্তিগত সুবিধা নেননি। জাতির অধিকার ও মর্যাদার জন্য আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন।
সভাপতির বক্তৃতায় মইনুদ্দীন কাদেরী শওকত বলেন, জাতীয় নেতা অলি আহাদ গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আজীবন ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরতান্ত্রিক সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করে গেছেন।
সভার শুরুতে ভাষা আন্দোলনের সিপাহসালার অলি আহাদসহ ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং ’২৪ এর গণঅভূত্থানে শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
আপনার মতামত লিখুন :