আশ্রয় ডেস্ক
নির্বাচনে বড় ধরনের কোনও আচরণবিধি লঙ্ঘন হচ্ছে না বলে দাবি করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেন, মাঠ প্রশাসন ও প্রার্থীদের কাছ থেকে আচরণবিধি লঙ্ঘনের খুব বেশি অভিযোগ আমরা পাইনি। কিছু ক্ষেত্রে সহিংসতা, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, পোস্টার ছেঁড়া হয়েছে। কিন্তু মোটাদাগে খুব বেশি ঘটনা ঘটেছে বলে মনে হয় না।
বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
প্রার্থীরা আচরণবিধি লঙ্ঘন করছে এবং সহিংসতা হচ্ছে, কেন মানাতে পারছেন না, জানতে চাইলে সিইসি বলেন, না, এটা আমি স্বীকার করি না। নির্বাচনি মাঠে আমরা এক্সটেনসিভ ঘুরে বেড়িয়েছি। প্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি। প্রশাসনের সাথে সভা করেছি। তাদের কাছ থেকে খুব বেশি অভিযোগ আমরা পাইনি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সহিংসতা, কিছু ক্ষেত্রে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, পোস্টার ছেঁড়া হয়েছে। কিন্তু মোটাদাগে খুব বেশি ঘটনা ঘটেছে বলে মনে হয় না।
সিইসি বলেন, তবে সহিংসতা একেবারে হয়নি, সে কথা বলছি না। আশা করি এটা গ্র্যাজুয়েলি…। আর কয়েকটা দিন আছে আমরা আবেদন রাখছি, প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। তারা যেন এটাকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করেন।
তিনি বলেন, একটা সময় প্রচারণা বন্ধ হয়ে যাবে। তারপর ভোটের দিন আসবে। ভোটের দিনটা নীরবে এবং আইনকানুন মেনে যদি ওটাকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তাহলেই ভোটাধিকার প্রয়োগটা আমরা জোর দিচ্ছি। সেখানে পোলিং এজেন্টরা থাকবে, কেন্দ্রের ভেতরে তাদের ভারসাম্যরা রক্ষা করতে হবে। আর বাহির থেকে ভেতর থেকে গণমাধ্যম যদি কোনও অনিয়মের ছবি ক্যাপচার করে, গণমাধ্যমে এটা যদি সম্প্রচার করতে পারে আমরা সেটাকে স্বাগত জানাবো। এভাবে একটা দৃশ্যমানতার মধ্য দিয়ে নির্বাচন প্রক্রিয়া স্বচ্ছতা যদি ফুটে ওঠে, তাহলে এর ক্রেডিবিলিটি বেড়ে যাবে এবং রং পারসেপশন হওয়ার সুযোগটা কম হবে। আমরা আমরা আশাবাদী।
মানবাধিকার কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের প্রশ্নে সিইসি বলেন, মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নির্বাচনকালীন মানবাধিকারের যে বিষয়গুলো আছে, সেগুলোকে হাইলাইট করে বক্তব্য দিয়েছেন। ভোটাধিকার, নির্বাচিত হওয়া এবং নির্বাচিত করা এটি একটি ফান্ডামেন্টাল হিউম্যান রাইট। উনি (মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান) আমাদের সহযোগিতা করতে চান। আমরাও উনাদের সহযোগিতা করতে চাই। আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে এই জিনিসগুলো গ্র্যাজুয়েলি যদি আমরা উনাদের বোঝাতে সক্ষম হই যে সহিংসতা বাদ দিয়ে অহিংস পদ্ধতিতেও নির্বাচন করা সম্ভব। সেই লক্ষ্যে আমাদের প্রয়াস অব্যাহত থাকা উচিত।
মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান ফ্রি ফেয়ার নির্বাচনের কথা বলেছেন উল্লেখ করে সিইসি বলেন, নির্বাচনে ভোটাররা আসবেন এটি ফ্রি ফেয়ার হতে হবে। ফ্রি ফেয়ার যদি না হয়, তাহলে ভোটাধিকার প্রয়োগ হবে না। ফ্রি ফেয়ারের প্রতিবন্ধকতা যদি কোথাও সৃষ্টি করা হয়, সেটা অবশ্যই বিঘ্নিত হবে। সেই লক্ষ্যেই আমরা যৌথভাবে কাজ করার বিষয়ে সহমত পোষণ করেছি।
তিনি বলেন, মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান মনে করেন রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক আস্থাটি খুবই কম। রাজনৈতিক দলের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা থাকা দরকার এবং যারা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, তাহলেও ওটাও গ্র্যাজুয়েলি নিচের দিকে যাবে। যখন প্রার্থী হিসেবে রাজনৈতিক দলের পক্ষে তারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তাহলে পারস্পরিক আস্থার একটা সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। তা না হয় আমাদের রাজনীতিতে এবং নির্বাচনি প্রক্রিয়া সহিংসতাটা কিছুটা থেকে যাবে।
গণমাধ্যমের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে সিইসি বলেন, গণমাধ্যমের ভূমিকা বস্তুনিষ্ঠ হওয়া প্রয়োজন। অনেক সময় গণমাধ্যম ঠিক তার যে অংশটুকু প্রয়োজন, ওইটুকু কেটে নিয়ে আগে-পিছে বাদ দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করে। এটা সব সময় নয়, মাঝেমধ্যে এটা করে মানুষকে বিভ্রান্ত করে। তাই গণমাধ্যমকেও আরও দায়িত্বশীল হওয়া উচিত।
বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করে সার্বিক যে নির্বাচনপ্রক্রিয়া বা রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখা প্রয়োজন বলে উনি মন্তব্য করেছেন।
আপনার মতামত লিখুন :