আশ্রয় ডেস্ক
সরকার নিষিদ্ধ ট্রলিং পদ্ধতিতে সাগরে মাছ ধরা বন্ধে বরগুনার মৎস্য বিভাগ সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বরগুনার উপকূলীয় পাথরঘাটা ও তালতলীর প্রায় দেড় শতাধিক ট্রলার এ ট্রলিং পদ্ধতিতে মাছ শিকার করে বলে স্থানীয় জেলে সূত্র জানিয়েছে। সমুদ্রে নিষিদ্ধ ট্রলিং এ মাছ শিকার বেড়ে যাওয়াতে মাছ কমে যাওয়ার পাশাপাশি মাছের আবাসস্থল ধ্বংস হচ্ছে, নিষেধাজ্ঞার সুফল মিলছে না বলে জানান মৎস্যজীবীরা। ট্রলিংয়ের কারণে দীর্ঘমেয়াাদি প্রভাব পড়ছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
বরগুনার পাথরঘাটা ও তালতলী ঘুরে দেখা গেছে, সমুদ্রে মাছ শিকার শেষে মৎস্য অবতরণকেন্দ্রের আশেপাশে নোঙর করে রাখা রয়েছে ট্রলিং বোট। এখান থেকেই আবার সমুদ্রে মাছ শিকারে যাচ্ছে নিষিদ্ধ এ নৌযান। সমুদ্রগামী ট্রলারগুলোতে জেলেরা সাধারণত ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে বড় ফাঁসের জাল ফেলেন। আর ট্রলিং পদ্ধতিতে তুলনামূলক ছোট ফাঁসের চোঙের মতো দীর্ঘ জাল যান্ত্রিক উপায়ে ফেলে দীর্ঘ পথে টেনে টেনে তোলা হয়। এ পদ্ধতিতে নানা জাতের ছোটমাছও জালে উঠে আসে; -জানালেন জেলেরা।
মৎস্যজীবীরা জানান, ‘ট্রলিং বন্ধ করা না গেলে আগামী এক-দুই বছরের মধ্যে সমুদ্রে পানি ছাড়া আর কিছু থাকবে না। ট্রলিংয়ের জালে সব ধরনের মাছ নিধন হচ্ছে। সমুদ্র তীরের বিভিন্ন জায়গায় একসঙ্গে বিপুল পরিমাণ ছোটমাছ মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। ট্রলিং দিয়ে শিকার শেষে এগুলো ফেলে দেয়া মাছ। ট্রলিং জেলেরা বাছাই করে পছন্দের মাছ রেখে বাকি মাছ সমুদ্রে ফেলে দেয়।’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ বিভাগের গবেষক বিপ্লব কুমার সরকার বলেছেন, ‘ট্রলিং পদ্ধতিতে মাছ শিকারের কারণে সমুদ্রে মাছের আবাসস্থল ধ্বংস হচ্ছে। এছাড়াও মাছের খাদ্যকণা বিলুপ্ত হচ্ছে। যা মাছের উৎপাদন ও আহরণে ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলছে।’
পাথরঘাটার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার অপু জানান, মৎস্য আইন ২০২০ অনুযায়ী যান্ত্রিক পদ্ধতিতে মাছ শিকার নিষিদ্ধ। কিন্তু এ আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সমুদ্র দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অনেক ট্রলিং বোট।
বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব জানিয়েছেন, ‘তিন বছর আগে আইনের মাধ্যমে ট্রলিং পদ্ধতিতে মাছ শিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আইনটি যথাযথভাবে বাস্তবায়নে এ আইন সম্পর্কে সচেতন করা হয়েছে। এবার আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছি।’
আপনার মতামত লিখুন :