নাচে-গানে জমকালো আয়োজনে আজ (১৪ নভেম্বর) প্রদান করা হচ্ছে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০২২। এর আগে ৩১ অক্টোবর ঘোষণা করা হয়েছে ২০২২ সালে মুক্তি পাওয়া সিনেমাগুলো থেকে সেরাদের নাম। এবার সেই বিজয়ীদের হাতে সরাসরি পুরস্কার তুলে দেওয়ার পালা। যথারীতি বিজয়ীদের হাতে পুরস্কারের ট্রফি, মেডেল, সম্মানী ও সার্টিফিকেট তুলে দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বসতে যাচ্ছে এই তারকাখচিত আসর। গত চার বছরের মতো এবারও অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করবেন ফেরদৌস ও পূর্ণিমা। তাদের সঞ্চালনায় পুরো অনুষ্ঠানজুড়ে থাকছে সিনেমার গানের বর্ণিল আয়োজন। জানা গেছে, বিখ্যাত বেশ ক’টি গানের সঙ্গে এবার মঞ্চে নাচবেন সাদিয়া ইসলাম মৌ, নুসরাত ফারিয়া, মাহিয়া মাহি ও তমা মির্জা। এই তারকারা গানের সঙ্গে একক নাচ পরিবেশন করবেন।
এছাড়াও থাকছে সাইমন সাদিক-দীঘি, আদর আজাদ-পূজা চেরী, সোহানা সাবা-গাজী নূর ও জায়েদ খান-আঁচলের দ্বৈত পরিবেশনা।
নাচের পারফরমেন্সে জায়েদ খান ও আঁচলকে মঞ্চে পাওয়া যাবে একটু আলাদা আবহে। এবারের আসরে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হচ্ছে চিত্রনায়ক কামরুল আলম খান খসরু ও নায়িকা রওশন আরা রোজিনাকে। তাদের অভিনীত দুটি গানেই সাজানো হয়েছে জায়েদ-আঁচলের পারফর্মেন্স। গানগুলো হলো- ‘ও প্রাণের রাজা’ ও ‘ছেড়ো না ছেড়ো না হাত’।
জায়েদ খান বললেন, ‘খসরু ভাই ও রোজিনা আপার সম্মানে দুটি গানে পারফর্ম করবো। আমার সঙ্গে থাকবে আঁচল। প্রধানমন্ত্রীর সামনে পারফর্ম করতে পারবো, এটা আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া।’
গানের সঙ্গে শুধু নাচই নয়, থাকছে শুধু গান পরিবেশনাও। এতে গাইবেন বালাম ও কোনাল।
পুরো আয়োজনে নাচের কোরিওগ্রাফি করছেন ইভান শাহরিয়ার সোহাগ। তিনি জানান, এবারের আয়োজনে নতুন এবং পুরনো দিনের গানের মেলোডি দিয়ে সাজানো হয়েছে বিভিন্ন পরিবেশনা।
এদিকে অষ্টমবারের মতো এই অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করতে যাচ্ছেন নায়ক ফেরদৌস। তিনি বলেন, ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করতে করতে অনেকটা অভ্যস্ত হয়ে গেছি। এই নিয়ে আটবার উপস্থাপনা করছি আমি। এবারও আমার সঙ্গে উপস্থাপনায় থাকছে পূর্ণিমা। আমরা দুজন এ নিয়ে চারবার উপস্থাপনা করছি। গেল ক’টি আমরা টানা মহড়া করেছি। প্রস্তুত আছি মঙ্গলবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সামনে সঞ্চালনা করার জন্য।’
আগেই প্রকাশিত হয়েছে, এবারের আসরে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার পাচ্ছেন চঞ্চল চৌধুরী। ‘হাওয়া’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য তিনি এই পুরস্কার পাচ্ছেন। অন্যদিকে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার যৌথভাবে পাচ্ছেন জয়া আহসান ও রিকিতা নন্দিনী শিমু; যথাক্রমে ‘বিউটি সার্কাস’ ও ‘শিমু’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য।
শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে যৌথভাবে দুটি ছবি। এরমধ্যে রয়েছে ‘কুড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া’ ও ‘পরাণ’। তবে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাতাদ্বয় শ্রেষ্ঠ পরিচালকের পুরস্কারটি পাননি। এই পুরস্কার অর্জন করেছেন ‘শিমু’ নির্মাতা রুবাইয়াত হোসেন।
অন্যান্য বিভাগের মধ্যে আরও পাচ্ছেন-
শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র: ‘ঘরে ফেরা’
শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্য চলচ্চিত্র: ‘বঙ্গবন্ধু ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’
শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা: নাসির উদ্দিন খান (পরাণ)
শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী: আফসানা মিমি (পাপ পুণ্য)
শ্রেষ্ঠ কৌতুক চরিত্রে: দিপু ইমাম (অপারেশন সুন্দরবন)
শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী: বৃষ্টি আক্তার (রোহিঙ্গা) ও মুনতাহা এমিলিয়া (বীরত্ব)
শিশুশিল্পী শাখায় বিশেষ পুরস্কার: ফারজিনা আক্তার (কুড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া)
শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক: রিপন খান (পায়ের ছাপ)
শ্রেষ্ঠ গায়ক: বাপ্পা মজুমদার (অপারেশন সুন্দরবন) ও চন্দন সিনহা (হৃদিতা)
শ্রেষ্ঠ গায়িকা: আতিয়া আনিসা (পায়ের ছাপ)
শ্রেষ্ঠ গীতিকার: রবিউল ইসলাম জীবন (পরাণ)
শ্রেষ্ঠ সুরকার: শওকত আলী ইমন (পায়ের ছাপ)
শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার: ফরিদুর রেজা সাগর (দামাল) ও খোরশেদ আলম (গলুই)
শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার: মুহাম্মদ আব্দুল কাইউম (কুড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া)
শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা: এস এ হক অলিক (গলুই)
শ্রেষ্ঠ সম্পাদক: সুজন মাহমুদ (শিমু)
শ্রেষ্ঠ শিল্প নির্দেশক: হিমাদ্রি বড়ুয়া (রোহিঙ্গা)
শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক: আসাদুজ্জামান (রোহিঙ্গা)
শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক: রিপন নাথ (হাওয়া)
শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজসজ্জা: তানসিনা শাওন (শিমু)
শ্রেষ্ঠ মেকআপম্যান: খোকন মোল্লা (অপারেশন সুন্দরবন)
আপনার মতামত লিখুন :