ছাত্রদল নেতা জনি হত্যা মামলায় আছাদুজ্জামান ৭ দিনের রিমান্ডে


assroy প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৪, ৫:৪৫ অপরাহ্ন /
ছাত্রদল নেতা জনি হত্যা মামলায় আছাদুজ্জামান ৭ দিনের রিমান্ডে

ছাত্রদল নেতা জনি হত্যা মামলায় সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
রাজধানীর খিলগাঁও থানা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুজ্জামান জনিকে পুলিশি হেফাজতে ‘ক্রসফায়ারের নামে হত্যার’ অভিযোগে এ মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলায় তিনি এজাহারনামীয় ১২ নম্বর আসামি।
আজ বৃহস্পতিবার আছাদুজ্জামান মিয়াকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম তার ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
বুধবার রাতে রাজধানীর মহাখালী ফ্লাইওভার এলাকা থেকে আছাদুজ্জামান মিয়াকে গ্রেফতার করে র‌্যাব।
২০১৫ সালের ২০ জানুয়ারি খিলগাঁও এলাকায় পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় কথিত বন্দুকযুদ্ধে মো. নুরুজ্জামান জনি নিহত হন। এর ৯ বছর পর গত ৩ সেপ্টেম্বর জনির বাবা ইয়াকুব আলীর করা খিলগাঁও থানায় মামলায় সাবেক এমপি সাবের হোসেন চৌধুরীসহ ৬২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালের ১৯ জানুযারি সকাল আনুমানিক ৮টা ১৫ মিনিটের দিকে নূরুজ্জামান জনি ও তার সহপাঠী মইনসহ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ছোট ভাই মনিরুজ্জামান হীরাকে দেখতে যান। কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ফেরার পথে আসামিরা জনি ও মইনকে ডিবি পরিচয় দিয়ে অবৈধভাবে আটক করে অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন চালায়। পরবর্তীতে তাদের ডিবি ঢাকা মেট্রোপলিটন-দক্ষিণ কার্যালয়ে নিয়ে গিয়েও নির্যাতন চালানো হয়।
তখন নুরুজ্জামান জনির ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মুনিয়া পারভিনসহ আত্মীস্বজনরা খিলগাঁও থানা, ডিবি দক্ষিণ অফিস, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অফিসসহ বিভিন্ন থানায় হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়ান। আসামিরা জনিকে আটক করেননি বলে জানান। দুদিন খোঁজাখুজি করার পরও নুরুজ্জামান জনির কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
পরবর্তীতে ২০ জানুযারি রাত আনুমানিক ৩টা থেকে সাড়ে ৩টার দিকে খিলগাঁও থানার জোড়াপুকুর খেলার মাঠের আশপাশের মানুষজন চিৎকার শুনতে পান। নির্যাতিত ব্যক্তিটি পানি-পানি বলে চিৎকার ও মা-মা বলে আর্তনাদ করতে থাকেন।
ঘটনাস্থলের এলাকার পাশে সি-ব্লকের বাসিন্দা লাভলী বেগম রাতে কান্নার শব্দ শুনেছেন বলে জানান। এ-ব্লকের বাসিন্দা সাইফুদ্দিনের স্ত্রী সানজিদা আক্তার সেতু জানান, রাত ৩টার দিকে ওমাগো, মা, মা.. বাঁচাও বলে কয়েকবার চিৎকার শুনেছেন।
ভোর রাতে বাদীসহ সাক্ষীরা ও প্রতিবেশীরা খিলগাঁও থানার জোড়াপুকুর মাঠের দিকে গিয়ে পুলিশ দেখতে পান। আসামিরা বলেন যে, নুরুজ্জামান জনি পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। তার মরদেহ ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে।
বাদী ও সাক্ষীরা ঢাকা মেডিকেল মর্গে যায় এবং সেখানে গিয়ে দেখতে পান নুরুজ্জামানের বুকের বামে, ডানদিকে, দুই হাতের তালুতে ১৬টি গুলির চিহ্ন। তার সমস্ত শরীর ঝাঁজরা করে ফেলেছে। শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। উপস্থিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের জিজ্ঞাসা করলে তারা কর্কশ ভাষায় গালিগালাজ করেন। মরদেহ গ্রহণ না করলে মামলা দেওয়ার হুমকি দেন।