অতিদ্রুত জুলাই হত্যাকান্ডের বিচার, শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা প্রদান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন ও দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণের দাবি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটি।
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশ থেকে শহীদ পরিবারের সদস্যরা ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতৃবৃন্দ এই দাবী জানান।
সমাবেশে শহীদ পরিবারের সদস্যরা জুলাই হত্যাকান্ডে জড়িতদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান। একই সাথে তারা থানায় মামলা করতে গিয়ে হয়রানির শিকার হওয়ায় এবং এখনও পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে শহীদ পরিবারের যথাযথ পুনর্বাসন না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে আহত হওয়া অনেকেই এখনো হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন। কিন্তু অন্য দিকে হত্যাকান্ডে জড়িতদের বিচার প্রক্রিয়া মন্থর গতিতে এগুচ্ছে। আহতদের যথাযথ চিকিৎসা দেবার পাশাপাশি এই হত্যাকান্ডের বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করার দাবী জানান তিনি।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, পাহাড়ে ও সমতলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে দেশি বিদেশী সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে হবে। দেশের আপামর জনগণকে বিভাজনের রাজনীতি ভেঙ্গে দিয়ে তারুণ্যের পালস বুঝতে সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, এই সংবিধান ফ্যাসিবাদ তৈরি করেছে, টিকিয়ে রেখেছে, মানুষের মানবিক ও রাজনৈতিক অধিকার হরণ করেছে। এই ফ্যাসবাদী সংবিধান জুলাই অভ্যুত্থানে ১৫শ’র অধিক নিহত ও ৩০ হাজারের অধিক আহত করার জন্য দায়ী। তাই এই সংবিধান বাতিল করে গণমানুষের আকাঙ্খার নতুন সংবিধান প্রণয়ন করতে হবে।
সীমান্তে হত্যা বন্ধে সরকারকে কঠোর অবস্থান নেয়ার আহ্বান জানিয়ে সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, গণহত্যাকারীদের চিহ্নিত করে দ্রুত বিচার কাজ শুরু করতে হবে।
সমাবেশে নাগরিক কমিটির সদস্য ও মায়ের ডাকের আহ্বায়ক সানজিদা ইসলাম তুলি গুমের রাজনীতি বন্ধ করার দাবি জানিয়ে বলেন, বিচার বহির্ভূত সকল হত্যাকান্ডকে এই রাষ্ট্র থেকে চিরতরে বিদায় করতে হবে।
দুর্গাপূজায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা প্রদানের তাগিদ দিয়ে বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি নিয়ে আওয়ামী লীগ ও দিল্লির মিথ্যাচার প্রতিহত করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরার আহ্বান জানান বক্তারা।
সমাবেশে শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকে শহীদ মমিনুল ইসলামের বাবা, শহীদ শাহরিয়ার হোসেন আলভীর বাবা, শহীদ ফারহান ফাইয়াজের বাবা, শহীদ নাহিদুল ইসলামের ভাই, শহীদ খালিদ হাসানের বাবা কামরুল হাসান, শহীদ আবু রায়হানের ভাই, শহীদ নাহিদ হোসেনের বাবা বক্তব্য রাখেন।
এছাড়া শহীদ অন্তরের বাবা-মা, শহীদ মতিউর রহমানের ছেলে ইসমেইল হোসেন, আহতদের মধ্যে শ্রমিক মোশাররফ হোসেনের পরিবারের সদস্যসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য আরিফুল ইসলামের সঞ্চালনায় সমাবেশে মশিউর রহমান, আতাউল্লাহ, আশরাফ মাহদি, ডা. আব্দুল আহাদ, প্রীতম দাশ বক্তব্য রাখেন।
আপনার মতামত লিখুন :