ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগসহ সব অঙ্গসংগঠনকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক।
সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করে অন্তর্বর্তী সরকার ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগের চেয়ে অনেক বেশি সন্ত্রাস করেছে যুবলীগ। তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি সন্ত্রাস করেছে আওয়ামী লীগ। যে কারণে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হয়েছে, সেই কারণে যুবলীগ নিষিদ্ধ হতে হবে, হাতুড়ি লীগ নিষিদ্ধ হতে হবে, হেলমেট লীগ নিষিদ্ধ হতে হবে। আওয়ামী লীগের রাজনীতি করবার কোনো অধিকার নাই।’
আজ শনিবার বিকেলে চট্টগ্রামের লালদিঘী মাঠে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলা শাখার উদ্যোগে আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সংগঠনের নায়েবে আমীর আল্লামা আলী উসমান সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন।
মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ২০০৯, ২০১৩, ২০২১ সালে ও ২০২৪ সালে শেখ হাসিনা যতগুলো গণহত্যা করেছে, প্রতিটি গণহত্যার জন্য তার এবং তার সহযোগিদের বিচার করতে হবে। অর্ন্তবর্তী সরকারকে বলতে চাই-এই খুনি হাসিনাকে ধরে এনে আইনের হাতে সোর্পদ করতে হবে। তার বিচার করতে হবে। ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে জনতাকে হত্যার জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গণহত্যার জন্য তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা ৭২’র সংবিধানের চেতনার উপর নির্ভর করে রাজনীতি করেছেন। শুধু শেখ হাসিনা নয় তার পিতা শেখ মুজিবুর রহমান সাহেবও ৭১’র চেতনা, স্বাধিকার আন্দোলনের চেতনাকে দু’পায়ে পদদলিত করেছেন, এদেশের মানুষের ভোটাধিকারকে বুটের চাপায় পিষ্ট করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলেন।
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ৭৫ থেকে শুরু হলো শেখ হাসিনার প্রতিশোধের রাজনীতি। ৭৫’র ১৫ আগস্ট থেকে ২৪’র ৫ আগস্ট পর্যন্ত শেখ হাসিনার ৫০ বছরের রাজনীতিকে পর্যবেক্ষণ করলে খুঁজে পাওয়া যাবে তার রাজনীতির মূলনীতি ছিল দুটি। দুটি দর্শনের উপর ভিত্তি করে চলেছে তার রাজনীতি। প্রথম দর্শন ছিল প্রতিশোধের রাজনীতি। দ্বিতীয় দর্শন ছিল বিভাজনের রাজনীতি। তিনি প্রতিশোধ নিয়েছেন বাংলাদেশের মানুষের ওপড়, তিনি প্রতিশোধ নিয়েছেন জাতির ওপড়।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিল আল্লাহর উপর অবিচল আস্থা ও বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে। ইনশাল্লাহ বলে আল্লাহর ইচ্ছা সামনে সবকিছুকে সোপর্দ করেই মুক্তিযুদ্ধের সুচনা হয়েছিল। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের কমিটমেন্ট ছিল, অঙ্গীকার ছিল এদেশের মাটিতে কুরআন সুন্নাহ বিরোধী কোন আইন তৈরি করা হবে না।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব নাছির উদ্দীন, মাওলানা জালালুদ্দীন আহমাদ, মাওলানা তোফাজ্জল হোসাইন মিয়াজী, মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, কেন্দ্রীয় অফিস ও সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুর রহমান হেলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আবুল হাসানাত জালালী ও মাওলানা আবু সাঈদ নোমান প্রমুখ।
আপনার মতামত লিখুন :