আশ্রয় ডেস্ক
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, বুদ্ধিজীবী ও মুক্তিযোদ্ধারা গণতান্ত্রিক স্বাধীন বাংলাদেশ চেয়েছিলেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই যে, বাংলাদেশের গণতন্ত্র এখন মৃত। তিনি বলেন, ‘সরকার দেশে নতুনভাবে একদলীয় বাকশাল কায়েম করতে চায়।’
বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মিলনায়তনে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি) এর উদ্যোগে ‘মহান মুক্তিযুদ্ধ, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের অবদান ও গণতন্ত্র’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
ড. আবদুল মঈন খান বলেন, ‘এই সরকার মনে করছে— তারা উন্নয়নের গল্প শুনিয়ে টিকে থাকবে। স্বাধীনতার বিজয়ের প্রাক্কালে দেশের মানুষ ভেবেছিল— বাংলাদেশ হবে একটি স্বাধীন দেশ। কিন্তু তার ঠিক আগ মুহূর্তে রাজাকার আলবদররা এক হয়ে দেশের মেধাস্বত্বকে হত্যা করেছে। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মেধাবী বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে। তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল— বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করে ফেলা। সেজন্যই মেধাবী বুদ্ধিজীবীদের তারা হত্যা করেছে। যা বিশ্বে বিরল ঘটনা। আমরা তাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশে বাস করছি।’
তিনি বলেন, ‘আজকে আমরা কোন বাংলাদেশে আছি, এখানে ভিন্নমতের কথা বলার সুযোগ নেই। আজকে বর্তমান সরকার দেশে বাকশাল কায়েম করতে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা দিচ্ছে। গুম খুন করছে। তবে বাংলাদেশের মানুষ অতীতে বাকশাল শাসন মানেনি। এখনও মানবে না। দেশের মানুষ চায়— তারা ৫ বছরে একবার ভোট দিতে। তারা নিজেরা জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করতে চায়। কিন্তু সেই ভোটাধিকার গেলো কোথায়? তারাই তো বলেছিল, আমার ভোট আমি দেবো যাকে খুশি তাকে দেবো। আজকে তারাই কেন বলে আমার ভোট আমি দেবো দিনের ভোট রাতে দেবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজকে আওয়ামী লীগ নিজেদের মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি হিসেবে পরিচয় দেয়। তাহলে একদলীয় বাকশাল শাসন কেন?’
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘অনেকেই বলেন, নতুনভাবে বাংলাদেশে কেন স্যাংশন আসেনি। এজন্য বিএনপি নাকি হতাশ? তাহলে কি আরও স্যাংশন এলে আওয়ামী লীগ দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিতো? কেন স্যাংশন দিয়ে বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হবে?’
মঈন খান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নাকি জনগণের দল। তাহলে তারা আওয়ামী লীগ কেন? নাকি উর্দু প্রেম ভুলতে পারেনি? এই প্রশ্ন তো আমি করতেই পারি। আমরা দেশের মানুষের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করার জন্য শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে আসছি। এরইমধ্যে বাংলাদেশের জনগণ এই সরকারকে প্রত্যাখান করেছে।’
তিনি বলেন, ‘সরকার হয়তো পুলিশ দিয়ে, বোমা দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে ক্ষমতায় থাকবে। কিন্তু আমার প্রশ্ন— আগামী প্রজন্মের কাছে, আপনার কোন বাংলাদেশ রেখে যাচ্ছেন? তাই বলছি আসুন, সংঘাতের রাজনীতি পরিহার করে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের নীতি ব্যবহার নিশ্চিত করি। তা না হলে বাংলাদেশের জন্য ভয়াবহ খারাপ পরিণতি অপেক্ষা করছে।’
বিএসপিপি’র সাবেক আহ্বায়ক রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরীর সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন— বিএসপিপির আহ্বায়ক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মাহবুবউল্লাহ, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুল হাই শিকদার, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম প্রমুখ।
আপনার মতামত লিখুন :