আবারও অবরোধ: নাশকতা ঠেকাতে কোন পথে পুলিশ


Assroy প্রকাশের সময় : নভেম্বর ৪, ২০২৩, ৫:২৬ অপরাহ্ন /
আবারও অবরোধ: নাশকতা ঠেকাতে কোন পথে পুলিশ

এক দিনের হরতালের পর টানা তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। ‍দুই দিন বিরতি দিয়ে আবারও ৫ ও ৬ নভেম্বর অবরোধের ডাক দিয়েছে দলটি। হরতাল ও অবরোধকে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বাস, ট্রাক, প্রাইভেট কার, পিকআপসহ ৮৫টি যানবাহনে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় নিহত হয়েছেন তিন জন।

এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে ৫ ও ৬ নভেম্বরের অবরোধ কর্মসূচিকে ঘিরে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনার প্রস্তুতি নিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি। বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহে মাঠে রয়েছেন গোয়েন্দা সদস্যরা। এ ছাড়া গণপরিবহনগুলোকে সচল রাখতে, জনমনে স্বস্তি ফেরাতে এবং অগ্নিসংযোগ প্রতিরোধেও থাকবে গোয়েন্দা সদস্যদের উপস্থিতি।

ডিএমপি বলছে, এক দিনের হরতাল এবং তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচির পরিপ্রেক্ষিতে যারা অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের চিহ্নিত করতে কাজ চলমান। হরতাল ও অবরোধকে কেন্দ্র করে কোন কোন এলাকায় আগুন দেওয়া হয়, কারা এসব অগ্নিকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত এবং যাত্রীবেশে অগ্নিসংযোগের ঘটনাগুলোকে প্রাধান্য দিয়ে বিশেষ নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। বাসে আগুনের ঘটনা কমিয়ে আনতে পরিবহনগুলোতে গোয়েন্দা সদস্যদের উপস্থিতি ও নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে। অবরোধ শুরুর আগের দিন সন্ধ্যা ও রাতে আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটানো হয়। এসব বিষয়কেও গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হচ্ছে।

ডিএমপি আরও বলছে, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে অগ্নিসংযোগের সঙ্গে জড়িত অনেককেই শনাক্ত করা হয়েছে। চেহারা শনাক্তের পর পরিচয় ও অবস্থান শনাক্তে কাজ করছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। যাদের পরিচয় দ্রুত শনাক্ত করা যাচ্ছে, অভিযান চালিয়ে তাদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। সেই সঙ্গে গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি, হামলা, অগ্নিসংযোগ এবং পুলিশ সদস্যকে হত্যার ঘটনায় মামলার পরিপ্রেক্ষিতে চলছে ধরপাকড়। এজাহারভুক্ত আসামি ছাড়াও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আগুনসন্ত্রাসসহ নাশকতার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, নাশকতা কিংবা হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনা ঘটিয়ে কারও পালিয়ে থাকার সুযোগ নেই। পাঁচ তারকা হোটেল বা সুবিধাজনক স্থান—যেখানেই অবস্থান নিক না কেন, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। পালিয়ে থেকে কেউ রক্ষা পাবে না। কাউকে কোনও ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না। এ ছাড়া এ ধরনের অপতৎপরতা বা নাশকতার অর্থদাতা, মদদদাতা, প্রশ্রয়দাতা যারা রয়েছে, তাদেরও আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদে এসব বিষয়ে যাদের সংশ্লিষ্টতার তথ্য পাওয়া গেছে, সেসব খতিয়ে দেখে হচ্ছে। তাদেরও আইনের আওতায় আনতে কাজ চলছে।

ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ সব সময় আগাম গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করে। বিভিন্ন জায়গায় যেভাবে বাসে আগুন দেওয়া হচ্ছে, এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের অনেককেই গ্রেফতার করা হয়েছে। অনেকের নাম আমরা পেয়েছি। তাদের ধরতেও অভিযান চালছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আরও দুই দিন তারা যে অবরোধের ডাক দিয়েছে, সেখানেও আমাদের আগাম তথ্য আছে। আমাদের পুলিশের প্রত্যেক সদস্য বিভিন্ন এলাকায় থাকবে। এ ছাড়া যারা মামলার আসামি এবং যাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি রয়েছে, তাদেরও আইনের আওতায় আনতে কাজ করছি আমরা।’